স্টাফ রিপোর্টার: যে অন্তর্কলহ মিটিয়ে মানস ভুঁইয়ার হাতে হাত রেখে বন্ধুত্বের স্লোগান তুলে তৃণমূল সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের বিধানসভায় পা রেখেছিলেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান, পাবলিক অ্যাকাউণ্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ ঘিরে আপাতত সেই কোন্দলই ফের প্রকাশ্যে এনে দিল কংগ্রেসের হাড় জিরজিরে দশা৷ আরও একবার সামনে এল দলের তুমুল গোষ্ঠীকোন্দল৷
সোমবার দিনভর সবংয়ের বিধায়ককে নিয়ে নাটকের পর মঙ্গলবার শুরু হয়ে গেল সেই নাটকের দ্বিতীয় অঙ্ক৷ কংগ্রেস সূত্রে খবর, পিএ কমিটির চেয়ারম্যান পদ না ছাড়লে মানস ভুঁইয়াকে সাসপেন্ড করা হতে পারে৷ অবিলম্বে সেই পদ তাঁকে ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি৷ স্বাভাবিকভাবে দল না ছাড়ার হুইপ মাথায় নিয়ে অধীর-আনুগত্যই প্রকাশ করেছেন অন্য বিধায়করা৷ তবে তাঁর কাছে এই পদ ছাড়ার কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি বলে এদিনও জানিয়েছেন মানস৷ একইসঙ্গে ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, নিয়মমাফিক কোনও নির্দেশ না এলে তিনি এই পদ ছাড়বেন না৷ এ নিয়ে একেবারে দিল্লিতে নালিশ জানিয়ে বসেছেন আবদুল মান্নান৷ তাঁর সতীর্থর বদলে প্রথম থেকেই এই পদে মান্নানের পছন্দের তালিকায় ছিলেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী৷ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, যা পরিস্থিতি তাতে মানস নিজের অবস্থানে অনড় থাকবেন৷ আর তাঁর এই অবস্থানকে তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাব ধরে নিয়েই চরম অস্বস্তিতে তাঁর দল৷ একেবারে টালমাটাল দশা৷
কংগ্রেসেরই এক বর্ষীয়ান নেতার এ বিষয়ে মন্তব্য, এক চালে নিয়ম মেনে বিরোধী জোটকে দশ গোল দিয়ে দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল৷ কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কোনওভাবেই তৃণমূলের দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলতে পারবে না কংগ্রেস৷ এর ব্যাখ্যা সোমবার বিধানসভার অধ্যক্ষই দিয়ে দিয়েছেন৷ বলেছিলেন, “বিকেল পর্যন্ত পিএ কমিটির চেয়ারম্যান পদের জন্য কোনও নামই জমা দিতে পারেনি বিরোধী দল কংগ্রেস৷ তাই অধ্যক্ষের ক্ষমতাবলে মানসবাবুর নাম ঘোষণা করেছি৷ এটা তো কংগ্রেসেরই ভুল৷” অর্থাৎ, নিজেদের ভুলেই একেবারে ল্যাজে-গোবরে অবস্থা কংগ্রেসের৷ যেভাবেই হোক, তৃণমূলের তীক্ষ্ণ রাজনীতির চালে কংগ্রেসের নৌকার পাল উপড়ে পড়ার জোগাড়৷ যা নিয়ে মানসের তৃণমূল-প্রীতি প্রমাণ করতেও উঠে পড়ে লেগেছে কংগ্রেস৷ দলীয় সূত্রে খবর, এই পিএ কমিটির চেয়ারম্যান পদে কখনওই মানসের নাম বিবেচনা করেননি প্রদেশ সভাপতি৷ ঘনিষ্ঠমহলে তিনি জানিয়েছিলেন, “মান্নান সাহেব আমার বিরোধী হলেও বিধানসভায় দলের হয়েই লড়বেন৷ কিন্তু মানসবাবুকে বিশ্বাস নেই৷” কাকতালীয় হলেও এভাবে সেই পরিস্থিতি সামনে এসে দাঁড়াবে তা বোধহয় আঁচও করতে পারেননি অধীর৷ শাসক দলের প্যাঁচে বিধানসভায় একেবারেই কোণঠাসা কংগ্রেস৷ আপাতত মানসবাবুও মুখে রা কাড়ছেন না৷ যার জেরে দলও আগবাড়িয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.