সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবার হাতেই মাটির তালকে চিন্ময়ী রূপ পেতে দেখেছিলেন। সেই থেকে স্বপ্ন দেখা শুরু। তবে বরাবরের ইচ্ছে ছিল নতুন কিছু তৈরি। আর এবার সেটাই করে দেখালেন অশোকনগরের সদ্য তরুণ পল্লবশেখর দাস। তাঁর হাতেই ফাইবারে ফুটে উঠল দুর্গতিনাশিনী। ইতিমধ্যেই সেই প্রতিমা পাড়ি দিয়েছে নভি মুম্বই।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের বাসিন্দা পল্লবশেখর দাস। ছোটবেলা থেকেই পেশায় শিক্ষক বাবা আর এক দাদাকে মূর্তি গড়তে দেখতে দেখতেই কখন যেন মূর্তি তৈরিটাই নেশা হয়ে হয়ে গিয়েছিল তাঁর। আর সেই নেশার বশেই বছর চারেক আগে প্রতিমা তৈরিতে হাতেখড়ি। এরপর স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে পৌঁছেছেন পল্লব। বর্তমানে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া তিনি।
সময় বদলালেও নেশা একই রয়ে গিয়েছে। শেষ চার বছরের মতো এবারও তাঁর হাতের ছোঁয়ায় একের পর এক সেজে উঠেছে প্রতিমা। শুধু তাই নয়, এবার ফাইবারের মূর্তি গড়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বছর আঠেরোর পল্লব। আর তাঁর হাতে গড়া সেই ফাইবারের দুর্গাই এবার পূজিত হবে সুদূর নভি মুম্বইয়ের একটি মণ্ডপে। ইতিমধ্যেই গন্তব্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে প্রতিমা। আর অশোকনগর থেকে সুদূর মুম্বই যাত্রায় বড়সড় ভূমিকা নিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া।
পল্লব জানিয়েছেন, সকলের মতোই সোশ্যাল সাইটে বেশ সক্রিয় তিনি। সেই কারণেই নিজের হাতে গড়া প্রতিমাকে আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই গত বছর বেশ কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন তিনি। তবে ভাবতেও পারেননি ওই ছবিই এত বড় সুযোগ এনে দেবে। কিন্তু বাস্তবে হল সেটাই। তিনি জানান, “আমার ফেসবুকে দেওয়া ছবি দেখেই নভি মুম্বইয়ের এক ব্যক্তি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনিই ফাইবারের মূর্তির বরাত দেন। সেই মতো কাজ শুরু করি।৩ মাস সময় লেগেছে ২ ফুট উচ্চতা আর ৩৪ ইঞ্চি প্রস্থের মূর্তিটি তৈরি করতে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই মুম্বইয়ের উদ্দেশে পাঠিয়েও দিয়েছি মূর্তিটি।”
ছেলের এই সাফল্যে খুশি পল্লবের পরিবারের সকলেই। পল্লবের ভবিষ্যতের স্বপ্ন সফল থিমশিল্পী হওয়া। চাকরির লক্ষ্যে ইঁদুর দৌঁড়ে একে অপরকে টেক্কা দিতে যখন মরিয়া সকলে, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে অষ্টাদশের এই কিশোরের দু’চোখে স্বপ্ন, মৃন্ময়ীতে চিন্ময়ীর রূপদান। আর এই লড়াই প্রথম থেকেই তাঁর সঙ্গী বাবা-মা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.