সুব্রত বিশ্বাস: কৈলাসে গিয়ে মায়ের আগমনির বার্তা দেয় নীলকণ্ঠ পাখি। সেই রেওয়াজ মেনে আজও দশমীতে মায়ের বিদায় বেলায় নীলকণ্ঠ উড়িয়ে দেওয়ার রীতি রয়েছে। তবে এই পাখি ধরা বা বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়ায় এখন মাটির নীলকণ্ঠই ভরসা।
হিন্দুশাস্ত্র মতে এই পাখি অত্যন্ত পবিত্র। এমনকী তার দেখা পাওয়াটা সৌভাগ্যের বিষয়। বাংলায় বিসর্জনের রীতিতে এই পাখির ব্যবহার প্রচলিত ছিল। তবে শুধু বাংলায় নয়, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও হিন্দি বলয়ে নীলকণ্ঠ পাখিকে রীতিমতো দেবতার আসনে বসানোর রীতি রয়েছে। অনেকে এই পাখিকে ভগবান শিবের এক রূপ বলে মনে করেন। এই পাখি দেখার অর্থ স্বয়ং শিব দর্শন। এই পাখি দেখে মনোবাসনা জানিয়ে আশিস চাওয়ার রীতি রয়েছে। তবে পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ায় নীলকণ্ঠের দেখা পাওয়াটা আজ একপ্রকার ভাগ্যের বিষয়। এই সুযোগে একশ্রেণির মানুষজন নীলকণ্ঠ পাখি খাঁচাবন্দি করে তা ঢেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে দেখিয়ে উপার্জন করে। উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে এই প্রথা এতটাই জনপ্রিয় যে শুধু একদিন এই পাখি দর্শনে মানুষজন প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন।
লোকবিশ্বাস, এই পাখির সামনে মনোবাসনা জানালে সে তা পৌঁছে দেয় স্বয়ং রামচন্দ্রের কছে। রামচন্দ্র রাবণ বধের আগে এই পাখির দর্শন পেয়েছিলেন। তারপরই তিনি পরাক্রমশালী রাবণকে বধ করতে সক্ষম হন। অসাধ্যসাধনের আগে নীলকণ্ঠ পাখির দর্শন পাওয়াটা খুবই ভাগ্যের বলে মনে করেন মানুষজন। এজন্য দশেরার দিন এই পাখি দর্শনের আকাঙ্ক্ষা খুবই প্রবল। এদিন কিছু মানুষ সেই সুযোগে নীলকণ্ঠ পাখি খাঁচাবন্দি করে বাড়ি বাড়ি দেখিয়ে বেড়ায় পয়সার বিনিময়ে। রাবণ বধের পর ব্রাহ্মণ হত্যার পাপে রাম ও লক্ষ্মণ শিবের ধ্যান করেন পাপ খণ্ডনের আশায়। সে সময় শিব উপস্থিত হয়েছিলেন নীলকণ্ঠ পাখি রূপে। এই বিশ্বাসে আজও সেখানকার মানুষজন এই পাখি দেখার আশায় থাকেন। যাকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছে এক শ্রেণির মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.