Advertisement
Advertisement
North Bengal Tourism

ভরা মরশুমে উত্তরের পর্যটনে সিঁদুরে মেঘ, যুদ্ধের আশঙ্কায় পাহাড় ছাড়ছেন পর্যটকরা

পর্যটকদের অনেকেই ঝুঁকি না নিয়ে ভ্রমণসূচি কাটছাঁট করছেন।

North Bengal tourists are leaving the mountains due to fear of war

ফেরার অপেক্ষায় পর্যটকরা। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:May 7, 2025 7:13 pm
  • Updated:May 7, 2025 7:15 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সফল ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান। আরও বড় প্রত্যাঘাতের ইঙ্গিতও রয়েছে ওয়াকিবহাল মহলে। সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর জোর তৎপরতা দেখা যাছে। সেই আবহে উত্তরের পর্যটনে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। ভরা মরশুমে বুধবার থেকে দুশ্চিন্তার সিঁদুরে মেঘ দেখা দিয়েছে।
চিকেনস নেকের পরিস্থিতি জানতে বিদেশি পর্যটকদের দিনভর ফোন রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটি এবং ট্যুর অপারেটরদের। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটকরাও ভ্রমণসূচি কাটছাঁট করে বাসে-ট্রেনে ফিরতে শুরু করলেন বাড়িতে। পাহাড়ের হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের শঙ্কা, দিন কয়েকের মধ্যে বুকিং বাতিলের হিড়িক শুরু হতে পারে। কার্যত আজ বুধবার থেকে নতুন বুকিং বন্ধ হয়েছে।

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের যত ভয় জুড়ে বসেছে ‘চিকেনস নেক’ ঘিরে। ওই ‘চিকেনস নেক’ অথবা ‘শিলিগুড়ি করিডর’ পাক সেনাদের সফট টার্গেট হতে পারে এমনই শঙ্কা পর্যটকদের একাংশের। ওই জায়গা ঘিরে রয়েছে চিন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে প্রচুর সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র আনা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে থমথমে পরিবেশ সিকিম থেকে ডুয়ার্স ও দার্জিলিংয়ে। হোটেল, রেস্তরাঁ থেকে বাজার প্রত্যেকের চোখ বারবার বন্দি হয়েছে মোবাইল ফোন অথবা টিভি স্ক্রিনে ভেসে ওঠা যুদ্ধ পরিস্থিতির খবরে। ওই অবস্থায় পর্যটকদের অনেকেই ঝুঁকি না নিয়ে ভ্রমণসূচি কাটছাঁট করছেন। তড়িঘড়ি পাহাড় থেকে নেমে বাসের টিকিট জোগাড় করে রওনা হয়েছেন বাড়ির পথে।

Advertisement
North Bengal tourists are leaving the mountains due to fear of war
আশঙ্কার মেঘ পর্যটকদের মধ্যে। নিজস্ব চিত্র

দমদমের নাগেরবাজার এলাকার বাসিন্দা সৌমেন দাস। রবিবার সাতদিনের সিকিম ভ্রমণে সপরিবারে গ্যাংটকে পৌঁছে যান তিনি। সোমবার না-থুলা পাস, ছাঙ্গু উপত্যকায় যান। মঙ্গলবার গ্যাংটক শহর ভ্রমণ করেছেন। বুধবার যাওয়ার কথা ছিল উত্তর সিকিমে। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে যুদ্ধের খবর মিলতে সূচি কাটছাট করে নিচে নেমে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে দাঁড়িয়ে সৌমেনবাবু বলেন, “এই মুহূর্তে সিকিম, শিলিগুড়ি খুবই স্পর্শকাতর জায়গা। চিকেনস নেক বলে কথা। আটকে গেলে বিপদে পড়ে যাব। তাই রবিবার ট্রেনের টিকিট বাতিল করে বাসের টিকিট জোগাড় করেছি।” শুধু সৌমেনবাবু কেন? একই উদ্বেগ অনেকেরই চোখেমুখে। রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “দিনভর বিদেশি পর্যটকদের ফোন এসেছে। প্রত্যেকে চিকেনস নেক এলাকার পরিস্থিতি জানতে চেয়েছেন। ওদের অনেকেরই দার্জিলিং ও সিকিম ভ্রমণের ইচ্ছে। কিন্তু আশ্বস্ত করলেও ওরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।”

পরিস্থিতি মোটেও ভালো নয়। এমনই মনে করছেন দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খান্না। তিনি বলেন, “যুদ্ধের দামামা বাজতেই কয়েক দিন থেকে নতুন বুকিং নেই। যে বুকিং রয়েছে সেগুলো কতটা শেষপর্যন্ত টিকবে, বলা মুশকিল। কারণ, যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে।” গ্রীষ্মের মরশুমে ডুয়ার্সে বুকিং অনেকটা কম থাকে। কিন্তু কয়েক দিনের যুদ্ধ শুরুর পরিস্থিতির ধাক্কায় এবার বুকিং নেই। লাটাগুড়ি রিসর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দে বলেন, “পর্যটকরা ঝুঁকি নিতে চাইছে না। ওই কারণে বুকিং নেই বললে চলে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement