বাবুল হক, মালদহ: বংশের সদস্য বাড়লে পুজোর সংখ্যাও বাড়ে। এক এক করে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। এবার কিন্তু আর্থিক কারণে মণ্ডল পরিবারে ১৪টি মৃন্ময়ী পুজিত হচ্ছেন। ঘট স্থাপন করে পুজো দেওয়া হবে বাকি ৯টি বাড়িতে। বংশের প্রথা মেনে কালিয়াচকের মণ্ডল পরিবারের পুজোয় শ্রীলঙ্কা থেকে পুরোহিত আসেন। এবার ১৪টি পুজোয় ১৪ জন পুরোহিত ও ১৪ জন ক্ষৌরকার থাকছেন। তবে শ্রীলঙ্কা থেকে এসেছেন একজন পুরোহিত। কলকাতা থেকে এসেছেন দু’জন। আর বাকি ১১ জন পুরোহিত মালদহের।
সুশীল মণ্ডলের বাড়ির পুজো করতে শ্রীলঙ্কা থেকে এসেছেন বলরাম মিশ্র। আগে পরিবারটি মালদহে ছিল। কলকাতা থেকে ফি বছর আসেন রাজীব মিশ্র। তিনি মণ্ডল বংশের হেমন্ত মণ্ডলের বাড়িতে পুজো করেন। আর কলকাতার জীবানন্দ পান্ডে তাঁদের আর এক দাদা রাধেশ্যাম মণ্ডলের বাড়িতে পুজো করেন।
দক্ষিণ মালদহের কালিয়াচকের আকন্দবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রামনগর গ্রামের ডিলারপাড়া। অদূরেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। গোটা ডিলারপাড়া জুড়েই রয়েছে মণ্ডল পরিবার। প্রত্যেকটি বাড়িতে আলাদা আলাদা মৃন্ময়ী গড়া হলেও মায়ের রূপ থাকে একই। বংশ পরম্পরা এই রীতিই চলে আসছে কালিয়াচকের মণ্ডল বংশে। পুরোহিতদের মতোই প্রতিমা শিল্পী ও ঢাকিরাও বংশ পরম্পরা চলে আসছেন।
প্রায় ২০০ বছর আগে থান তৈরি করে মণ্ডল বাড়িতে পুজো শুরু হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে এই পুজোর সংখ্যা ছিল ৪টি। মূল ভিটে থেকে কেউ পৃথক হয়ে পাড়ায় অন্য বাড়ি তৈরি করলে তাকেও মা-কে সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়। মূল থানের মাটি নিয়ে গিয়ে বাড়িতে দেবীর নতুন থান ও মূর্তি গড়তে হয়। এই কৌলিন্য আজও মেনে চলেন মণ্ডল বংশের সদস্যরা। প্রথা মেনে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রত্যেকটি পুজোর ভোগ নবমীর রাতে রান্না করেন কুলগুরু। আগে তান্ত্রিক মতে পুজো হত, এখন কালের ক্রমে বৈষ্ণব মতে পুজো হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.