সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৬০ সালে রোম ওলিম্পিকে ৪০০ মিটার বিভাগে চতুর্থ স্থানে শেষ করেছিলেন উড়ন্ত শিখ মিলখা সিং। বত্রিশ বছর আগে ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলেস ওলিম্পিকে একই যন্ত্রণায় কাতর হয়েছিলেন পিটি উষা। ৪০০ মিটার হার্ডলসে সেবার সেই তরুণী চতুর্থ হয়ে শেষ করেন। কিংবদন্তি দুই অ্যাথলিটের সঙ্গে এবার একই আসনে বসলেন দীপা কর্মকার।
দীপার ফলাফল জানাতেই সবচেয়ে বেশি সময় নিলেন বিচারকরা। বেশ খানিকক্ষণ অপেক্ষার পর জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠল ১৫.০৬৬ পয়েন্ট। তখনও রুপো জয়ের দৌড়ে রয়েছেন তিনি। কিন্তু পার্থক্য গড়ে দিলেন বিশ্বের সেরা জিমন্যাস্ট সিমোন বাইলস এবং পাসেকা মারিয়া। ফলস্বরূপ অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হল বাঙালিনী দীপার। স্বাধীনতা দিবসে রিওর পোডিয়ামে ভারতের তেরঙ্গা উড়ল না ঠিকই। কিন্তু বিশ্ব দরবাদে তিনি যে কৃতিত্বের নিদর্শন রেখে গেলেন, তা গোটা দুনিয়া বহু যুগ মনে রাখবে। দীপার এই অসামান্য কীর্তির জন্য তাঁকে টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিগ বি। লিখেছেন, “তুমি আমাদের আরও ভাল করার অনুপ্রেরণা দিলে। তোমার জন্য গর্বিত।”
যে দেশে কোটি কোটি টাকা খরচ আইপিএল, আইএসএল-এর মতো টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। আবার শুধুমাত্র প্রতিযোগীদের উদ্বুদ্ধ করার অজুহাতে তাঁদের সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য কোটি টাকা ব্যায়ে রিও পাড়ি দেন দেশের মন্ত্রীরা। সে দেশে ছা-পোষা মধ্যবিত্ত পরিবারের দীপাদের প্রতিভা অর্থের অভাবে হারিয়ে যায়। তাদের সাহায্যের জন্য কোনও নামজাদা কোম্পানি এগিয়ে আসে না। এমনকী সরকারের আশীর্বাদী হাতের দেখা মেলে না। হ্যাঁ, ওলিম্পিকের মতো মঞ্চে দেশের জন্য পদক এনে দিতে পারলে অবশ্য তাঁদের দিকে নজর পড়ে। জমকালো মেকি দুনিয়ায় জায়গা হয় দীপার মতো ‘অনামী’ প্রতিভাদের। ব্র্যান্ড ভ্যালুও বেড়ে যায়। গ্রেটেস্ট শোয়ের ফাইনালে অনবদ্য পারফর্ম করে দীপা যেন এই বৈষম্যকেই সপাটে চড় কষালেন।
ত্রিপুরাবাসী তাঁকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছেন। ইতিহাস তৈরি করে বাড়ির মেয়ে বাড়ি ফিরছেন। বাবা-মার চোখেও আনন্দাশ্রু। এই ওলিম্পিকে তো দীপার সবে পথ চলা শুরু। সমস্ত প্রতিকূলতা টপকে সেরার সেরা হয়ে দেখাবেন তিনি। আশা দেশবাসীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.