সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঋত্বিক ঘটক তাঁর সাহায্য ছাড়া চলচ্চিত্র জগতের শিরোমণি হয়ে উঠতে পারতেন কি না সন্দেহ! মহেন্দ্র কুমারের নামটি এমন ভাবেই জড়িয়ে গিয়েছে তাঁর এবং তাঁর ছবির সঙ্গে। অথচ, মৃত্যুর বারো দিন পরেও সেই কিমবদন্তি সিনেম্যাটোগ্রাফার মহেন্দ্র কুমারের দেহ পড়ে রয়েছে কাঁটাপুকুর মর্গে। আত্মীয়রা তা দাবি করেননি। এমনকী, তাঁর শেষকৃত্য নিয়ে কলকাতার সাংস্কৃতিক জগতও আশ্চর্যজনক ভাবে চুপ! কারও তরফেই কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না মহেন্দ্র কুমারের শেষকৃত্য নিয়ে।
জানা গিয়েছে, ৩ অক্টোবর কলকাতার গল্ফগ্রিনের ফ্ল্যাটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। একটি ছেলে সকালবেলায় চা দিতে এসে দেখে তাঁর প্রাণহীন দেহ। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এবং, দেহ কেউ দাবি করছে না বলে তা স্থান পায় কাঁটাপুকুর মর্গে। সেই থেকে ওখানেই অবহেলায় পড়ে রয়েছে মহেন্দ্র কুমারের দেহ।
তবে কলকাতার সাংস্কৃতিক মহল এ বিষয়ে উদাসীন হলেও মহেন্দ্র কুমারের ছাত্ররা চুপ করে বসে নেই। তাঁরা শেষকৃত্যের অধিকার চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিস্তর অনুসন্ধানের পরে অবশেষে মহেন্দ্র কুমারের এক আত্মীয়র খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গেই প্রথমে যোগাযোগ করবে কলকাতা পুলিশ। তাঁরা আগ্রহী না হলে তখন শেষকৃত্যের অধিকার দেওয়া হবে ছাত্রদের। সব মিলিয়ে, পরিস্থিতি এখনও তিমিরেই!
শোনা যায়, ১৯৫০-এর মাঝামাঝি কোনও এক সময় তরুণ মহেন্দ্রকে ভবানীপুরের রাস্তায় হারমোনিকা বাজাতে শোনেন ঋত্বিক ঘটক। সেই তাঁদের একসঙ্গে পথ চলা শুরু। এর পর মেঘে ঢাকা তারা, সুবর্ণরেখা, কোমল গান্ধার- ঋত্বিকের একেকটি কিংবদন্তি ছবি সমৃদ্ধ হয় মহেন্দ্র কুমারের ক্যামেরার কাজে। যখন অর্থাভাবে ছবি তৈরি বন্ধ রাখতে হয়েছিল ঋত্বিককে, তখন এই মহেন্দ্র কুমারই বিজ্ঞাপনী ছবি করে টাকা এনে দিতেন তাঁকে।
বলাই যায়, কলকাতার অলিগলিতে এই যে ঋত্বিক ঘটক বনাম সত্যজিৎ রায় বিতর্ক চলে, তা মহেন্দ্র কুমারের সৌজন্যেই! তিনি না থাকলে ঋত্বিক ঘটক হয়তো এতটাও পরিচিতি পেতেন না! সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জাগে- কোথায় গেলেন কলকাতার সাংস্কৃতিক মহলের বিখ্যাতরা যাঁরা সবাই আজ কিংবদন্তি এই সিনেম্যাটোগ্রাফারের শেষকৃত্য নিয়ে উদাসীন?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.