ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের রাফায় হামলা চালালো ইজরায়েল। মঙ্গলবার রাতভর ইজরায়েলি সেনার বোমাবর্ষণে সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১ জন। গত ছয় মাস ধরে ইহুদি দেশটির আক্রমণে গোটা গাজা ভূখণ্ডই কার্যত গুঁড়িয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ গাজার এই রাফা শহরই এখন গাজার সাধারণ মানুষের শেষ আশ্রয়। কিন্তু মাস দুয়েক ধরে হামাস নিধনে এখানে আক্রমণের ধার বাড়িয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী। যা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকাও।
গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, রাফায় অন্তত তিনটি বাড়ির উপর বোমা ফেলে ইজরায়েলি বাহিনী। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের। এই ঘটনায় বাবা-মাকে হারিয়েছেন মুসা ধাহির নামে ব্যক্তি। রয়টার্সকে তিনি জানিয়েছেন, “আমি জানি না এখন আমি কী করব, কী বলব। আমার বাবা তাঁর ঘরছাড়া বন্ধুদের নিয়ে গাজা থেকে এখানে এসেছিলেন। সকলে একসঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে সবাই যেন ধুলোয় মিশে গেলেন।” সেখানকার আরেক বাসিন্দা আবু হাউরি বলেন,”গত কয়েকদিনে এখানে বোমাবর্ষণ বেড়ে গিয়েছে। আমাদের বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন। এই ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে আমরা কোথায় যাব?”
বলে রাখা ভালো, মিশর সীমান্তবর্তী এই রাফা শহরে এখন প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষের বাস রয়েছে। এটাই এখন শরণার্থীদের শেষ আশ্রয়। এই মুহূর্তে রাফা সীমান্ত বন্ধ করে রেখেছে মিশর। ফলে এই শহরের বাইরে আর পালানোর পথ নেই। রাফাতে যাতে হামাস জঙ্গিরা শক্ত ঘাঁটি তৈরি করে আক্রমণ শানাতে না পারে তাই এখানেও হামলা করছে ইজরায়েল। জেহাদিদের ডেরা খুঁজে বের করতে রাফায় ঢুকে অভিযান শুরু করার ডাক দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গত সপ্তাহেই বাইডেন ফোন করেছিলেন নেতানিয়াহুকে। তিনি বলেছিলেন, “হামাস নির্বিচারে ইজরায়েলিদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। ইজরায়েলের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে হামাসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর। কিন্তু রাফার সাধারণ মানুষদের কথাও ভাবতে হবে। আমাদের একটা বিকল্প পথ খুঁজতে হবে। যার মাধ্যমে অভিযান না চালিয়েও রাফায় হামাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যায়। আমি চাই, ইজরায়েলি সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা ওয়াশিংটনে এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। আমরা একযোগে একটা পথ বের করতে পারি।”
জানা গিয়েছিল, বাইডেনের ওই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিলেন নেতানিয়াহু। চলতি সপ্তাহের শেষে কিংবা আগামী সপ্তাহের শুরুতে তিনি ইজরায়েলি সেনার আধিকারিকদের ওয়াশিংটনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু গত সোমবার ‘বন্ধু’ ইজরায়েলকে জোর ধাক্কা দেয় ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসন ভেটো প্রয়োগ না করায় নিরাপত্তা পরিষদে পাশ হয়ে যায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব। এতেই ক্ষুব্ধ হন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। সাফ জানিয়ে দেন আমেরিকায় তিনি কোনও প্রতিনিধি দল পাঠাবেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.