সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজার পাশাপাশি এবার লেবাননে ঢুকেও ‘যুদ্ধ’ শুরু করেছে ইজরায়েল। একের পর এক মিসাইল ছুড়ে ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লার ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি সেনা। কিন্তু রণক্ষেত্রে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন তেল আভিভের ৭ জন সৈনিক। লেবাননে রক্তক্ষয়ী অভিযানের কথা জানিয়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)।
গত কয়েকদিন ধরে হেজবোল্লাকে টার্গেট করে লেবাননে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষও। এর মাঝেই শনিবার ইজরায়েলি হামলায় নিহত হন নাসরাল্লা। এবার সর্বশক্তি নিয়ে লেবাননে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আইডিএফ। বুধবার প্রথমে একজন সৈনিকের মৃত্যুর খবর বিবৃতি দিয়ে তারা জানায়, ‘লেবাননে অভিযান চালানোর সময় ২২ বছর বয়সি ক্যাপ্টেন ইতান ইতজাক ওস্টার নিহত হয়েছেন।’ তবে আল জাজিরা সূত্রে খবর, দক্ষিণ লেবাননে হেজবোল্লার সঙ্গে লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন ইজরায়েলি সৈনিক।
লেবাননে লড়াই চালানোর পাশাপাশি গাজাতেও হামলা জারি রেখেছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। হামাসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করছে তারা। গতকালই গাজায় ইজরায়েলের হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ২২ জনের। ফলে এই মুহূর্তে তিনটি ফ্রন্টে লড়াই করছে তেল আভিভ। গাজায় হামাস, লেবাননে হেজবোল্লার পাশাপাশি সংঘাত শুরু হয়েছে ইরানের সঙ্গেও। হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লার মৃত্যুর ‘বদলা’ নিতে ইহুদি দেশটিতে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে তেহরান। গোটা ইজরায়েল জুড়ে আছড়ে পড়ে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল। নিশানা করা হয়েছিল মোসাদের সদর দপ্তরকেও। কিন্তু অল্পের জন্য রক্ষা পায় ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা। এর পরই পালটা আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়ে দিয়েছে তেল আভিভ। তাদের খতম তালিকায় রয়েছে ইরানের ‘সর্বশক্তিমান’ আয়াতুল্লা আলি খামেনেইর নাম।
এই পরিস্থিতিতে গোপন আস্তানায় লুকিয়ে পড়েছেন ইরানের সুপ্রিম লিডার খামেনেই। এনিয়ে ভারতের ইজরায়েলি দূতাবাসের মুখপাত্র গাই নির হুঁশিয়ারি দিয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, “ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লা আলি খামেনেই যদি পুরোদমে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তাহলে সেটা খুব বড় ভুল হবে। ইজরায়েল কৌশলগতভাবে ইরানের মিসাইল হামলার জবাব দেবে। তবে সেটা যুদ্ধ নয়। আমরা মনে হয় না কোনও তা চাইবে। আর যদি অন্য কোনও দেশ ইরানকে সাহায্য করে তাহলে তার উপরও আমাদের তীক্ষ্ণ নজর থাকবে।”
সমর বিশ্লেষকদের মতে, ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে যে সংঘাত শুরু হয়েছে তাতে হামাসের ষড়যন্ত্রই কার্যত সফল হচ্ছে। গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইহুদি দেশটিতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে হেজবোল্লা। তাদের যুক্তি ছিল গাজায় হামাসকে সমর্থন জানিয়েই এই আক্রমণ শানানো হচ্ছে। পাশাপাশি লোহিত সাগর উত্তপ্ত করে রেখেছে ইরানের মদতপুষ্ট ইয়েমেনের হাউথিরা। কয়েক মাস আগেই তারা তেল আভিভের মার্কিন দূতাবাসের সামনে ড্রোন হামলা চালায়। সেখানেও ঘটে প্রাণহানি। ফলে সবদিক থেকে ইজরায়েলকে কার্যত ঘিরে ফেলেছে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। আর এদের মাথায় রয়েছে ইরান। ফলে গাজায় হামাস কোণঠাসা হয়ে গেলেও ইজরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষ জারি রয়েছে। ক্রমেই গাজা থেকে এই সংঘাত বড় আকার ধারণ করে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.