সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অপারেশন সিঁদুরে বড়সড় সাফল্য। সূত্রের খবর, ভারতের প্রত্যাঘাতে মৃত্যু হয়েছে জইশ কমান্ডার আব্দুল রউফ আজহারের। ১৯৯৯ সালে ভারতের আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণের (কান্দাহার বিমান হাইজ্যাক) মূলচক্রী ছিল সে।
জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের ভাই রউফ। ভারতের বুকে একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য সে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিদের তালিকায় ছিল। ২০০৭ সালে রাউফ জইশের প্রধান হয়। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই সে ভারতের আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণের গোটা পরিকল্পনা করে। শুধু তাই নয়, ২০০১ সালের সংসদ এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলাতেও নাম জড়িয়েছিল তার।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণ করে একদল জেহাদি। উড়ানটি কাঠমাণ্ডু থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু জঙ্গিরা বিমানটিকে অমৃতসরে নিয়ে যায়। উড়ানের জ্বালানি তখন তালানিতে। এদিকে অমৃতসরেই বিমানটিকে আটকানোর পরিকল্পনা করে ভারত। কিন্তু সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে অমৃতসর থেকে লাহোর এবং সেখান থকে আফগানিস্তানের কান্দাহার বিমানবন্দরে পাড়ি দেয় বিমানটি। কান্দাহার বিমানবন্দরে অপহরণকরীদের জামাই আদর করেছিল তৎকালীন তালিবান সরকার। বিমানে পণবন্দি যাত্রীদের উদ্ধারে যাতে ভারতীয় কমান্ডোরা কোনও অভিযান চালাতে না পারে সেই ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে আইসি-৮১৪ বিমানের চারিদিকে সাঁজোয়া গাড়ি মোতায়েন করেছিল তালিবরা। একপ্রকার বাধ্য হয়ে জইশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা ও মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী মাসুদ আজহার, মুস্তাক আহমেদ জরগার ও ওমর সইদ শেখের মতো তিন কুখ্যাত জঙ্গিকে মুক্তি দিয়েছিল ভারত। আর সেই সব দিনের সাক্ষী ছিলেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর তৎকালীন প্রধান তথা ভারতের বর্তমান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, অপহরণকারীদের মদত দিচ্ছিল আইএসআই। কান্দাহার বিমানবন্দরেও মজুত ছিলেন আইএসআই অফিসাররা।
১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিভীষিকাময় অধ্যায় শেষ হয় ৩১ ডিসেম্বর। ভারতের মুক্তি দেওয়া তিন জেহাদিকে ও অপহরণকারীদের কোয়েটা পৌঁছে দেয় তালিবান। তারপর অন্য যাত্রীদের সঙ্গে মুক্তি পান অভিশপ্ত আইসি-৮১৪ বিমানের ক্যাপ্টেন দেবীশরণ। এত বছর পর এবার সেই রউফকে শেষ করল ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.