সুকুমার সরকার, ঢাকা: দেশ ভাগ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু হাতি তো আর কাঁটাতার বোঝে না। উজান বেয়ে সে তাই পৌঁছে গিয়েছে অসম থেকে বাংলাদেশে। হাতিদের দল হামেশাই এমনটা করে। কিন্তু বন্যার জল বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেই আটকে পড়েছে একটি হাতি। আর তাকে ফেরাতেই একজোট হয়েছেন দু’দেশের বনবিভাগের কর্তারা।
প্রায়ই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের লোকালয়ে ভারতীয় বুনো হাতি চলে যায়। পরে আবার নিজের দেশে ফিরেও আসে। কিন্তু বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় আটকে পড়েছে এই হাতিটি। গত ২৭ জুন বাংলাদেশ সীমান্তে ঢোকার পর হাতিটি কুড়িগ্রামের রৌমারিতে ছিল ৯ জুলাই পর্যন্ত। এরপর কখনও গাইবান্ধায়, কখনও জামালপুরে তো কখনও বগুড়া হয়ে বর্তমানে তার অবস্থান জামালপুরেই। নদীপথে আসার সময় বেশিরভাগ সময় চর এলাকায় থেকেছে সে। বানের জলে ভাসছে আশপাশ। ফলে বেশ বিপাকেই পড়েছে হাতিটি। হারিয়েছে ফেরার রাস্তাও।
এরই মধ্যে এই অনাবাসী হাতি পরিণত হয়েছে হাজারো মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। কেননা বাংলাদেশে হাতি বিরল প্রাণির তালিকায়। তাই প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন বহু মানুষ। কেউ আসছেন নৌকা ভাড়া করে, কেউবা জল ভেঙে। মানুষের এমন ‘উৎসাহ’ সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পাহারায় থাকা বনকর্মীদেরও। কীভাবে তাকে ফেরানো যায় তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
কখনও সাঁতরে, কখনও হেঁটে এক মাসে প্রায় একশো কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দেওয়া ক্লান্ত হাতিটিকে অজ্ঞান করে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন বনকর্মীরা। কিন্তু বন্যার সময় এ ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তাঁরা। কেননা জল থাকার দরুণ হাতিটিকে সরাতে সমস্যা হতে পারে। বুধবার বিকেলের মধ্যে অসম থেকে বন কর্মকর্তা, হাতি বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত মাহুতসহ একটি দল পৌঁছবে। হাতিটিকে এখন পর্যবেক্ষণে রেখেছে বাংলাদেশের বন অধিদফতরের ১৭ জনের একটি দল। তাদের সঙ্গে বৈঠক করেই হাতিটিকে কীভাবে ও কোথায় নেওয়া হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে দুইপক্ষ। শিল্প-সংস্কৃতিতে দুই দেশের এক হওয়ার গল্প প্রায়শই শোনা যায়, এবার সেই সম্মিলনের সৌজন্যে থেকে গেল এই হাতিটিই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.