সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনের অসুখ বড় কঠিন। নরকের মতো দুঃখ, বেদনা সইতে হয়। যে ভাষায় এই যন্ত্রণার বর্ণনা ছিল, সেই ভাষার প্রাণপ্রদীপ নিভে গিয়েছে। গভীর মানসিক অবসাদে ভুগে নিজেকে শেষ করে দিলেন নরওয়ের প্রখ্যাত লেখক তথা সে দেশের রাজকুমারীর প্রাক্তন স্বামী অঁরি বেন, মাত্র ৪৭ বছর বয়সে। অঁরি বেনের প্রয়াণে শোক নেমে এসেছে নরওয়ের সাহিত্য মহলে।
ডেনমার্ক বংশোদ্ভুত সাহিত্যিক এই অঁরি বেনের প্রথম রচনা একটি ছোট গল্পের সংকলন – স্যাড অ্যাজ হেল। যার ছত্রে ছত্রে ছিল জীবনযন্ত্রণার অনুভূতিমালা। এরপর প্রেম, বিয়ে। অঁরি বেনের জীবনে সেও বড় কম আকর্ষণীয় নয়। তাঁর মা ছিলেন নরওয়ের রাজকুমারীর ফিজিওথেরাপিস্ট। সেইসূত্রে রাজকুমারী মার্থা লুইসের সঙ্গে তাঁর আলাপ-পরিচয় এবং মন বিনিময়।
২০০২ সালে অঁরি বিয়ে করেন মার্থাকে। সেসময় নিজেদের প্রেম-পরিণয় পর্বের ছোট ছোট কোলাজ নিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ফ্রম হার্ট টু হার্ট। কিন্তু অচিরেই সেসব সুখের দিন ঝরে যায়। তিন সন্তানের জনক-জননী অঁরি-মার্থা দীর্ঘ ১৪ বছরের দাম্পত্য জীবনে ছেদ টানেন ২০১৬ সালে। তারপর থেকেই অঁরি মানসিকভাবে কিছুটা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন।
পরবর্তী সময়ে লাস ভেগাসে মাদকাসক্ত যৌনকর্মীদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন, তাঁদের নিয়েই থাকতেন। মাঝে বেশ বিতর্কেও জড়ান। তার মাঝেও নিজের সঙ্গে নিজের অনন্ত লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখে ফেলেছিলেন – ইনফারনো। তবে শেষপর্যন্ত মানসিক যন্ত্রণার কাছে হার মানলেন অঁরি। নিজেকেই নিজে মুক্তি দিয়ে দিলেন এই নশ্বর জীবন থেকে। বুধবার তাঁর বাড়িতেই মিলেছেন দেহ। অঁরি বেনের ম্যানেজার ইমেলে জানিয়েছেন তাঁর মৃত্যু সংবাদ।
নরওয়ের রাজ পরিবারের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ”বহু বছর ধরে অঁরি আমাদের পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। ওঁর সঙ্গে আমাদের খুব সুন্দর স্মৃতি আছে। আমাদের নাতি-নাতনিরা তাঁদের প্রিয় বাবাকে হারাল, খুবই বেদনার।” শোকভরা কণ্ঠে নরওয়ের সাহিত্য মহলে চলছে ফিসফাস, অঁরির আরও অনেক কিছু লেখার ছিল। অকালে ঝরে পড়ল সাহিত্য জগতের এক গুণী জন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.