সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) কিছুতেই থামছে না হিংসা। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেকব জুমার গ্রেপ্তারির পর থেকে দেশজুড়ে শুরু হওয়া দাঙ্গায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২১২ জনের।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, গত সপ্তাহ থেকে দেশজুড়ে চলা হিংসাত্মক বিক্ষোভের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন ২১২ জন বলে জানিয়েছেন সাউথ আফ্রিকার মন্ত্রী খুমবুডজো শাভেহনি। দেশটির উপকূলবর্তী KwaZulu-Natal প্রদেশে শুক্রবার মৃত্য হয়েছে ৮০ জনের। সবমিলিয়ে ওই প্রদেশে এপর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৮০ জন। পার্শ্ববর্তী গাউতেঙ্গ প্রদেশে হিংসার বলি হয়েছে কমপক্ষে ৩২ জন মানুষ। হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার অভিযুক্তকে। এহেন টালমাটাল অবস্থায় দেশটিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে অন্তত ২৫ হাজার সেনাকে। তবুও দাঙ্গাকারীদের বাগে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেকব জুমার (Jacob Zuma) গ্রেপ্তারির পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দক্ষিণ আফ্রিকায়। কার্যত ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার ছবি স্পষ্ট করে দেশটিতে চলছে অবাধ লুটতরাজ। শপিংমল, দোকান-বাজারে আগুন জ্বালিয়ে সমস্ত পণ্য নিয়ে পালাচ্ছে দাঙ্গাবাজের দল। ফলে নিজের সম্পত্তি রক্ষা করতে মিলিশিয়া বা সশস্ত্র বাহিনী তৈরি করছেন দেশটির শ্বেতাঙ্গ নাগরিকরা।
২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) প্রেসিডেন্ট ছিলেন জুমা। বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনে দেশটির বর্তমান শাসকদল ‘আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। ফলে আর্থিকভাবে দুর্বল কৃষ্ণাঙ্গদের ও দলের তৃণমূল স্তরে জুমার জনপ্রিয়তা বিস্তর। তবে শাসনকালে দেশের সম্পদ নয়ছয় ও দুর্নীতির বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিশেষ করে ‘গুপ্তাগেট’ কাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে তাঁর নাম। অভিযোগ, ব্যক্তিগত স্বার্থে ভারতীয় বংশোদ্ভুত গুপ্তা পরিবারের হাতে দেশের সম্পদ তুলে দিয়েছেন জুমা। সেই সূত্রে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশাসন।আদালত তাঁকে সশরীরে হাজিরা দিতে নির্দেশ দিলেও তিনি তা করেননি। তারপরই আদালতের অবমাননায় গত শুক্রবার ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাঁকে। যার পরেই দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই হিংসা।তবে সবাই যে জুমার সমর্থনে লুটপাট চালাচ্ছেন তা নয়। অনেকেই আর্থিক দুরবস্থার হাত থেকে রেহাই পেতে সুযোগ বুঝে দোকান থেকে পণ্য চুরি করছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.