সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসের প্রশ্নে মুখ ফিরিয়েছে আমেরিকা। বন্ধ হয়েছে প্রায় সমস্ত সামরিক সাহায্য। তাতে কী? নতুন পাকিস্তানের নতুন বন্ধু হয়েছে চিন। আরও গভীর হচ্ছে সেই বন্ধুত্ব। ঋণজর্জরিত দেশের কোষাগারে অক্সিজেন জোগাতে মোটা অঙ্কের সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দিল বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি। সূত্রের খবর, ইমরান খানের পাকিস্তানকে আড়াইশো কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে শি জিনপিংয়ের চিন।
পাকিস্তানের কুর্সিতে ইমরান খানের অভিষেক হওয়ার পর জাতীয় ভাঁড়ারে নজর পড়েছে। দেখা গিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় প্রায় তলানিতে। এই মুহূর্তে হাতে যা আছে, তাতে টেনেটুনে দুটো মাস চলবে। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক – কেউই পাকিস্তানকে সাহায্য করতে রাজি নয়। এই পরিস্থিতি অবশ্য একদিনে হয়নি। প্রায় পাঁচ, ছ’বছর ধরে পাকিস্তানের কোষাগারের এমন হতশ্রী দশা। সামরিক খাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাহায্য মিলছিল। সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান জোরদার করতে। কিন্তু জঙ্গি অধ্যুষিত এলাকার কোনও উন্নতি তো হয়ইনি, সক্রিয়তা বেড়েছে জঙ্গিদের। সেসব দেখেই ধাপে ধাপে সামরিক সাহায্য বন্ধ করেছে আমেরিকা। এমনই চরম মুহূর্তে পাকিস্তানের পাশে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে ধনী প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিন। গত কয়েক বছর ধরেই সেদেশে ইউয়ানের সঞ্চয় একটু একটু করে বেড়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা বছরে চিন যে অঙ্কের অর্থসাহায্য পাকিস্তানকে দেয়, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। আর এবছর সেই অঙ্ক আড়াইশো কোটি মার্কিন ডলার। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ২০০ কোটি ডলার স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের সিন্দুকে জমা হয়েছে।
[‘ভুল করেছি’, বাড়ি ফিরতে চান জার্মান ‘আইএস বধূ’]
বিগত সরকারের বিরোধিতায় তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরানের অন্যতম হাতিয়ার ছিল এই বৈদেশিক ঋণ। ক্ষমতায় আসার আগে এভাবে দেশ চালানোর তীব্র সমালোচনা করতেন। কিন্তু কথায় আছে, যে যায় লঙ্কায়, সে হয় রাবণ। চেয়ারে বসে ইমরান দেখেন, জাতীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রা হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র। ফলে তিনিও ‘ঋণং কৃত্বা, ঘৃতং পিবেৎ’ মন্ত্রেই উজ্জীবিত হলেন। নজর দিয়েছেন প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে। চিন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সফরে তাঁর অন্যতম মূল উদ্দেশ্য ছিল, তাদের কাছে আবেদন জানানো। সেই আবেদনে চিনের মতোই সাড়া দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে আরব দেশটি।
[ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে সরল রাশিয়া, আমেরিকাকে জবাব পুতিনের]
তবে পাকিস্তানকে চিনের এতটা অর্থ সাহায্য দেওয়ার খবরে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত-সহ উপমহাদেশের অনেক দেশেই। নিশ্চিন্তে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। চিনা মদতপুষ্ট পাকিস্তান যে কোনও ছুঁতোয় রণ আগ্রাসী হয়ে পড়বে না তো? এই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.