সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব শান্তির লক্ষ্যে সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী কে? বিশ্বগুরু হওয়ার লড়াইয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে থাকা আমেরিকাকে টক্কর দিতে মাঠে নামল চিন। যার জেরে বিশ্ব রাজনীতিতে শুরু হল কৃতিত্ব দখলের বেনজির লড়াই। রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষ বিরতির লক্ষ্যে ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন ও রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনার বিষয়ে সম্মত করার কৃতিত্ব সোশাল মিডিয়ায় জাহির করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সেই পথে ‘শান্তির দূত’ হওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামল চিনও।
হোয়াইট হাউসের অধীশ্বর হওয়ার পরই ৩ বছর ধরে লড়তে থাকা রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংঘাত থামাতে তৎপর হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই লক্ষ্যেই সোমে পুতিনকে ফোন করে প্রায় ২ ঘণ্টা কথা বলার পর সোশাল মিডিয়ায় ফলাও করে সে কথা জাহির করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জানান, দ্রুত যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনার বসতে রাজি হয়েছে মস্কো-কিয়েভ। ট্রাম্পের এই বার্তার পরই মাঠে নামে চিন। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও উইং জানান, “চিন শান্তির লক্ষ্যে যে কোনও প্রচেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন করে। আমরা আসা করি দুই পক্ষে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সুসম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।” কূটনৈতিকভাবে চিন এই বার্তা দিলেও বিবৃতিতে স্পষ্ট যে নিজেদের ‘শান্তিদূত’ হিসেবে কোনও খামতি রাখছে না তারা।
চিনের এই বার্তা প্রসঙ্গে কূটনৈতিক মহলের দাবি, মঙ্গলবার চিনের বার্তায় এটা স্পষ্ট যে চিন চায় এই যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব তারা পাক। এই বার্তায় তারা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল তারা। সে চেষ্টাও চিনের তরফে করা হয়েছিল। যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিল চিন। ২০২৩ সালে পুতিনের সঙ্গে দেখা আলোচনার মাধ্যমে শান্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন শি জিনপিং। তবে সেই সব উদ্যোগকে ধামাচাপা দিয়ে ট্রাম্প একা পুরো কৃতিত্ব নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই ময়দানে নামল চিন।
উল্লেখ্য, সোশাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লেখেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ২ ঘণ্টার কথোপকথন শেষ হল। রাশিয়া ও ইউক্রেন দ্রুত যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করবে। যুদ্ধবিরতির শর্ত দুই রাষ্ট্র নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে।’ পাশাপাশি এই যুদ্ধ শেষের পর রাশিয়ার সঙ্গে বৃহত্তর বাণিজ্যের বার্তা দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমেরিকা চায় এই রক্তপাত শেষ হওয়ার পর বৃহত্তর বাণিজ্যের পরিসর তৈরি করতে। রাশিয়ার জন্য বিপুল কর্মসংস্থান এবং সম্পদ তৈরির একটি দুর্দান্ত সুযোগ রয়েছে।’ ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার কথা স্বীকার করে বার্তা দেন পুতিনও। তিনি জানান, ‘সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনায় বসতে সম্মতি জানিয়েছি। ভবিষ্যতে ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করতেও আমরা প্রস্তুত। তবে এই শান্তি চুক্তির শর্ত ও সময় রাশিয়া জানিয়ে দেবে।’ পুতিন আরও বলেন, ‘এই সংঘর্ষবিরতির লক্ষ্যে রাশিয়ার অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। সমস্যার মূল কারণগুলি খুঁজে বের করে তার সমাধান ও শান্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.