সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানকে কবজা করাই এখন পাখির চোখ চিনের। আর বেজিংয়ের সেই স্বপ্নপূরণের হাতিয়ার CPEC (China Pakistan Economic Corridor)। বিষয়টা যে পাক নীতি নির্ধারকদের কাছে গোপন কিছু নয় তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু নিজের নাক কেটেও পরের যাত্রাভঙ্গের উদ্দেশ্যে ভারত বিরোধিতা করতে গিয়ে ‘অলাভজনক’ প্রকল্পটির ভার বহন করে চলেছে ইসলামাবাদ। ফলে দুর্নীতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে ক্রমেই পাক ক্ষমতার অলিন্দে শিবিরগুলির মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। আর এতে রীতিমতো খাপ্পা চিন। ফলস্বরূপ পাকিস্তান সফর বাতিল করেছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
গত জুন মাসে সফর পিছনোর পর চলতি সপ্তাহেই পাকিস্তানে আসার কথা ছিল জিনপিংয়ের। কিন্তু আন্তর্জাতিক মঞ্চে জল্পনা উসকে ইসলামাবাদে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও জিং জানিয়েছেন, করোনা মহামারীর কথা মাথায় রেখে আপাতত পাকিস্তান সফর বাতিল করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি আরও জানান, যৌথভাবেই ভাইরাসটির সঙ্গে লড়াই চলবে দুই দেশ। যদিও তাঁর এই কথা পরিস্থিতি সামাল দিতে কূটনৈতিক বুলি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর নিয়ে এতদিন অবশ্য বেজায় উৎফুল্ল ছিল ইসলামাবাদ। এতদিন তারা ভাবছিল, এতে দারুন লাভবান হবে পাক অর্থনীতি। যদিও সম্প্রতি তাদের সেই ভুল ভেঙেছে। নিজেদের প্রকৃতির ক্ষতি করে চিনকে বেশ কিছু রাস্তা বানাতে দিচ্ছে না পাক সেনা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের কথায়, CPEC প্রকল্পে পাকিস্তানের বাণিজ্যিক বা আর্থিক কোনও লাভই সেই অর্থে নেই। বরং ওই পথে সস্তার চিনা পণ্যে চেয়ে যাচ্ছে পাক বাজার। মার খাচ্ছে স্থানীয় কারবারিরা। পাশাপাশি, ওই প্রকল্পের অন্তর্গত নির্মাণকাজে নিজের দেশ থেকে শ্রমিক এনে কাজ করাচ্ছে চিন। ফলে পাকিস্তানিদের কাজের সুযোগ মিলছে না। বিশেষ করে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এ নিয়ে তীব্র বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কিন্তু পাক শাসকরা চিনা পুঁজির লোভে এই প্রকল্পে সায় দিয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, CPEC প্রকল্পের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম বাজওয়ার বিরুদ্ধে লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে কয়েকদিন আগেই ইমরান খানের উপদেষ্টার পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, উপমহাদেশীয় এলাকায় কর্তৃত্ব ফলানো মূল লক্ষ্য বেজিংয়ের। আর তার জন্য পাকিস্তান, নেপাল, ভূটানকে হাতের মুঠোয় রাখতে চাইছেন জিনপিং। আবার এই চাল সফল হলে ভারতকেও বিপাকে ফেলা সহজ হবে। তবে দুর্বল অর্থনীতির যেসমস্ত দেশ চিনের এই ফাঁদে পা দিয়েছে, তাঁদের অর্থনীতি চিরকালের মতো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে চিনের সামনে হাত পেতে থাকা ছাড়া তাদের আর কোনও গতি নেই। খুব শীঘ্রই পাকিস্তানেরও তেমন পরিস্থিতি হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.