সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরেই চিনের (China) ইউহান (Wuhan) শহরে প্রথম করোনা (Coronavirus) আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। আর তারপর কত তাড়াতাড়ি সেখান থেকে গোটা বিশ্বের মাথার উপরে ঝুঁকে পড়েছিল অতিমারীর কালো মেঘ, তা সকলেরই জানা। বছরশেষেও সেই সংকট থেকে মুক্তি মেলেনি। এরই মধ্যে চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসির (CDC) এক সমীক্ষার রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর দাবি। সেখানে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এপ্রিলের মধ্যেই উহানে করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন অন্তত ৫ লক্ষ মানুষ। যা সরকারি হিসেবের ১০ গুণ বেশি!
উহানে ওই সময়কালের মধ্যে ৫০ হাজার মানুষের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল চিন। কিন্তু সমীক্ষার দাবি, আসল সংখ্যাটা ৪ লক্ষ ৮০ হাজার বা তারও বেশি হতে পারে। এপ্রিলের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, ওই শহরের ৪.৪ শতাংশ মানুষের শরীরে রয়েছে অ্যান্টিবডি। অর্থাৎ তাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই কারণেই শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে।
গত এপ্রিলে ৩৪ হাজার মানুষের উপরে করা ওই সমীক্ষার রিপোর্ট সবে মাত্র সোমবার পেশ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, যদি এই সমীক্ষার দাবি সত্যি হয় তাহলে আসল সংখ্যার সঙ্গে চিনের সরকারি হিসেবের এতটা পার্থক্য কেন? মনে করা হচ্ছে, এর পিছনে অন্যতম কারণ হতে পারে উপসর্গহীন কোভিড আক্রান্তদের হিসেবের মধ্যে না ধরা। যখন সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, তখনও এই ধরনের আক্রান্তদের নাম সরকারি হিসেবে রাখা হয়নি।
সারা বিশ্বে তো বটেই, দেশের মধ্যেও প্রবল সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়েছিল চিন প্রশাসনকে। অভিযোগ উঠেছিল সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে তার নিয়ন্ত্রণ সেভাবে না করতে পারা নিয়ে। রাজনৈতিক কারণেই জানুয়ারির গোড়া পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের একটি কেসের কথাও জানায়নি চিন। পাশাপাশি যাঁরাই এই নিয়ে মুখ খুলতে চেয়েছেন তাঁদেরও দমন করা হয়েছে কড়া হাতে। গত সোমবারই সংক্রমণ শুরুর সময়ের উহানের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট করায় সাংবাদিক ঝ্যাং ঝ্যানকে চার বছরের জন্য জেলে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপির কাছে চিনের এক সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্তা স্বীকার করেছেন, জানুয়ারির শেষে এমনকী ফেব্রুয়ারির শুরুতেও বহু সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়নি। অথবা পরীক্ষা হলেও তা যথাযথ ছিল না। সেই কারণেই আসল সংখ্যার সঙ্গে সরকারি হিসেবের ফারাক হয়ে থাকতে পারে। আরেক বিশেষজ্ঞ কিন ইং অবশ্য সাফাই গেয়েছেন। তাঁর মতে, এমনটা কেবল চিন নয়, অন্য দেশের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকতে পারে। বহু সময়ই দেখা গিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যার থেকে অ্যান্টিবডি থাকা ব্যক্তিদের সংখ্যা অনেক বেশি। করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে চিন যে অনেক হিসেব চেপে দিয়েছে, এমন অভিযোগ আমেরিকা বহুবার করেছে। এই সমীক্ষার রিপোর্ট যেন সেই অভিযোগের পক্ষেই সওয়াল করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.