সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের প্রত্যাঘাতে বালাকোটে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে জইশ-ই-মহম্মদের সর্ববৃহৎ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র৷ বিলাসবহুল থাকার জায়গা, সুইমিং পুল, জিম কী ছিল না এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিতর৷ পাঁচতারা হোটেল বললেও খুব কম বলা হয় এই প্রশিক্ষণ শিবিরকে৷
মঙ্গলবার ভোররাতে বালাকোট শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় জইশের প্রধান প্রশিক্ষণ শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি মিরাজ-২০০০ বোমারু বিমান৷ পাঁচতারা হোটেলের থেকে কোনও অংশে কম ছিল না এই জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরটি।পাহাড়ের উপরেই ঘন জঙ্গল৷ তাই ভৌগোলিক দিক থেকে জইশ-ই-মহম্মদের পুরনো এই ঘাঁটি ছিল অনেকাংশেই নিরাপদ৷ ২০০১ সালের আগে আফগানিস্তানে ছিল জইশের প্রধান কার্যালয়। তালিবানের সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করত এই সংগঠন। পাকিস্তানে আধিপত্য ছিল লস্কর-ই-তৈবার। এরপর আত্মপ্রকাশ জইশের৷ লক্ষ্য একটাই লস্করের জনপ্রিয়তায় ভাগ বসানো৷ নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তারা ডেরা বাঁধে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কাছে মানশেরার বালাকোটে। এই ডেরা আগে ছিল জঙ্গি সংগঠন লস্করের দখলে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এই জঙ্গি শিবিরে ৫০০ থেকে ৭০০ জনের থাকার বন্দোবস্ত ছিল। বেশ নিপুণ হাতে সাজানো ছিল প্রত্যেকটি ঘর৷ দেওয়ালে আঁকা ছিল বিভিন্ন দেশের মানচিত্র৷ এছাড়াও আঁকা থাকত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের পতাকা, ব্যানার৷ সিঁড়িগুলিতে আঁকা ছিল টার্গেটে থাকা বিভিন্ন দেশের পতাকা৷ প্রত্যেকটি ঘরই ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত৷ অস্ত্র, গোলা-বারুদ রাখার জন্য আলাদা ঘর ছিল বালাকোটের জইশের প্রধান প্রশিক্ষণ শিবিরে৷ বালাকোটের ওই প্রাসাদোপম জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে ছিল সুইমিং পুল এবং জিম৷ রান্না এবং ঘর পরিষ্কার করার জন্য লোকজনেরও বন্দোবস্ত ছিল৷
জঙ্গিতে নাম লেখানো যুবকদের এনে তোলা হত বালাকোটের এই বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেলের সমান প্রশিক্ষণ শিবিরে৷ মাত্র এক বছরের মধ্যেই প্রশিক্ষণ নিতে আসা যুবকেরা হয়ে উঠত ফিদাঁয়ে জঙ্গি৷ ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক নানা মন্তব্যের মাধ্যমে কার্যত মগজধোলাইয়ের পর আত্মঘাতী জঙ্গি হয়ে উঠত প্রত্যেকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.