সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘একনায়ক’ বলে নিশানা করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দীর্ঘ সময় ধরে চলা যুদ্ধের জন্য ফের একবার জেলেনস্কির ঘাড়েই দোষ চাপালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর সমস্ত কিছু দেখে মুচকি হাসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনটাই মনে করছেন সমর বিশ্লেষকরা।
জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালীন আমেরিকা হাত খুলে সাহায্য করেছে ইউক্রেনকে। মার্কিন অস্ত্রে বলীয়ান হয়েই রণক্ষেত্রে রুশ ফৌজকে পালটা মার দিয়েছে জেলেনস্কির ‘লিলিপুট’ বাহিনী। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরতেই ইউক্রেনের অনুদানে কাটছাঁট করেছেন। জেলেনস্কিকেও কড়া ভাষায় একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছেন। বুধবার রাতে সৌদি আরবের উদ্যোগে মায়ামিতে অনুষ্ঠিত ‘এফআইআই প্রায়োরিটি’ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সাংবাদিক সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তুলোধোনা করে তিনি বলেন, “নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় রয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি তো একনায়ক। তাঁর উচিত এখনই ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। নাহলে দেশের আর কিছু থাকবে না।”
২০১৯ সালে নির্বাচন জিতেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন জেলেনস্কি। ২০২৪-এ তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাঝে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ ঘোষণা করেন পুতিন। সেই থেকেই রণক্ষেত্রে আগুন ঝরাচ্ছে দুদেশের সেনা। আর ইউক্রেনের আইন অনুযায়ী যুদ্ধের সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় না। তাই এখনও দেশের রাশ হয়েছে জেলেনস্কির হাতেই। এবার এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করলেন ট্রাম্প। মঙ্গলবারও যুদ্ধ শুরু করা নিয়ে জেলেনস্কিকে দোষারোপ করে তিনি বলেছিলেন, “জেলেনস্কি একজন ব্যর্থ নেতা। আলোচনা বা সমঝোতার পথে আসার কোনও ক্ষমতাই নেই তাঁর। তিন বছর পূর্ণ হতে চলল এই যুদ্ধের। জেলেনস্কিরই তো উচিত ছিল অনেক আগেই চুক্তি করে লড়াই বন্ধ করে দেওয়া।”
পালটা ট্রাম্পকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও। তিনি বলেন, “পুতিনের তৈরি মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।” বলে রাখা ভালো, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে কিছুটা হলেও জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন জেলেনস্কি। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের ৫০ শতাংশ মানুষ এখনও তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকা-ইউক্রেনের এই দ্বন্দ্বে বাড়তি অক্সিজেন পাচ্ছে রাশিয়া। সমস্ত কিছু দেখে মুচকি হাসছেন পুতিন। ক্ষমতায় ফিরে নতুন করে মস্কোর সঙ্গে আলোচনার পথ খুলেছেন ট্রাম্প। এতে সিঁদুরে মেঘ দেখেছিল ইউক্রেন। এবার তাদের আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবসায়ী ট্রাম্প লাভ-ক্ষতির হিসাব খুব ভালো বোঝেন। জো বাইডেনের জমানায় প্রচুর আর্থিক ও সামরিক সাহায্য পেয়েছে ইউক্রেন। এবার সবটা সুদে-আসলে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। তাই ইউক্রেনের পাশে থাকার বিনিময়ে দেশটির ৫০ শতাংশ খনিজ সম্পদ দাবি করেছে আমেরিকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.