সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সৌদি আরব আর আমেরিকার বন্ধুত্ব বহুদিনের। ওয়াশিংটনের থেকে বিপুল হারে অস্ত্রশস্ত্র কেনে মরুদেশটি। অন্যদিকে আবার মধ্য়প্রাচ্যে আমেরিকার সামরিক সহযোগী রিয়াধ। এই মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফের বিপুল অঙ্কের অস্ত্রচুক্তি করেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে। আর এই সাক্ষাতেই এমবিএসকে আজব প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ট্রাম্প। জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার রাতে ঘুম হয়? আপনি ঘুমোন কীভাবে?
দেশের রাজধানী রিয়াধকে বিশ্বের অন্যতম ব্যবায়িক কেন্দ্রে পরিণত করেছেন যুবরাজ সলমন। গোটা দুনিয়ার তাবড় তাবড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতিরা এখানে ব্যবসার জন্য ছুটে আসেন। তবে বিতর্কও পিছু ছাড়েনি যুবরাজের। কিন্তু সমস্ত কিছুকে দূরে ঠেলে নিজের দেশকে শক্তিশালী ‘বিজনেস হাবে’ পরিণত করেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, এই সাফল্যের কথা উল্লেখ করেই ট্রাম্প বলেন, “মহম্মদ আপনি রাতে ঘুমান? আপনার কীভাবে ঘুম হয়? আপনার কী কাজ! তুমি সারারাত ধরে ভাবো কীভাবে এই কাজটাকে আরও ভালো করব?”
ট্রাম্পকে আরও বলতে শোনা যায়, “সৌদি আরবের উত্থান নিয়ে সমালোচকরা সন্দেহ করেছিলেন। কিন্তু গত ৮ বছর ধরে এমবিএসের নেতৃত্বে সৌদি আরব সমালোচকদের সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করেছে। অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটিয়েছে। আমি এমবিএসকে খুব পছন্দ করি।” এএফপি সূত্রে খবর, মধ্যপ্রাচ্যে তিন দিনের সফরের প্রথম দিনে গতকাল মঙ্গলবার রিয়াধে পৌঁছন ট্রাম্প। তাঁকে স্বাগত জানান যুবরাজ সলমন। প্রাথমিক বৈঠকের পর দু’দেশের মধ্যে চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়। আমেরিকা ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রায় ১৪২ বিলিয়ন (১৪ হাজার ২০০ কোটি) ডলারের অস্ত্র চুক্তি হয়েছে। এছাড়াও আমেরিকায় বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগেরও চুক্তি করেছে রিয়াধ। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এদিন সৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির চুক্তি’ করেছে আমেরিকা।
কৌশলগত দিক দিয়ে আমেরিকার সঙ্গে সৌদি আরবের বন্ধনও খুবই মজবুত। মরুদেশটিতে বেশ কয়েকটি মার্কিন সেনাঘাঁটি রয়েছে। যেখান থেকে যেকোনও মুহূর্তে ইরানে হামলা চালাতে মার্কিন ফৌজ। দু’দেশের এই অস্ত্রচুক্তির উপর কড়া নজর রয়েছে তেহরানের। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চিনের হস্তক্ষেপে ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্কের মধ্যে বরফ গলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রসঙ্গে সৈদি যুবরাজের উপর ক্ষুব্ধ অনেকেই। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর কলামিস্ট জামাল খাশোগ্গির হত্যায় মহম্মদ বিন সলমনের হাত ছিল বলে অভিযোগ। আমেরিকা সলমনকে ‘ক্লিনচিট’ দিলেও বিতর্ক থিতিয়ে যায়নি। কিন্তু ইরানকে চাপে রাখতে সৌদি আরবের সঙ্গে জোট আরও জোরদার করছেন ট্রাম্প। তাই এই সফর খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.