সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। রবিবার রাতে পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ে তাঁর হেলিকপ্টার। তার পর থেকেই রাইসির মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সোমবার সকালে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে রাইসির পর ইরানের প্রেসিডেন্টের আসনে কে বসবেন? কীভাবেই বা হবে নির্বাচন?
রবিবার দুর্ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই জল্পনা শুরু হয়েছিল, রাইসির মৃত্যু হলে ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন? উঠে আসে ইসলামিক দেশটির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুখবারের নাম। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তিনি সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা খামেনেইর অত্যন্ত আস্থাভাজন বলেই পরিচিত। এই মুহূর্তে তাঁরই অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব সামলানোর কথা রয়েছে। তবে পুরোপুরিভাবে প্রেসিডেন্টের আসনে বসতে গেলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে মুখবারকে।
ইরানের সংবিধানের ১৩১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে সাময়িকভাবে ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সেই পদের দায়িত্ব সামলাবেন। এর পর আগামী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে। কিন্তু অন্তিম সিদ্ধান্ত রয়েছে ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেইর হাতে। এক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর অনুমোদনের উপরই নির্ভর করছে মুখতারের ভাগ্য।
তবে তেহরান রাজনৈতিক মহল বলছে, ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে মুখবারের রাস্তায় খুব একটা কাঁটা নেই। তিনি খামেনেইর খুব কাছের লোক বলেই পরিচিত। রাইসির সঙ্গেও মুখবারের সম্পর্ক ভালো ছিল। ফলে রাইসির গদিতে যে মুখবারই বসছেন তা একপ্রকার নিশ্চিত। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাইসির আকস্মিত মৃত্যুতে সেই ভোটপ্রক্রিয়া এগিয়ে এসেছে চলতি বছরের জুলাইয়ে।
বলে রাখা ভালো, ২০২১ সালে বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্টের আসনে বসেন ইব্রাহিম রাইসি। ভোটযুদ্ধে তাঁর সামনে টিকতে পারেননি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি। কট্টরপন্থী হিসেবেই পরিচিতি রাইসির। তিনিই নাকি ইরানের পরবর্তী সুপ্রিম লিডার হওয়ার দৌড়ে এগিয়েছিলেন। এক সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে রাইসির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল আমেরিকা। বরাবরই আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলোর তীব্র সমালোচনা শোনা গিয়েছে রাইসির মুখে। তাঁর সরকারের আমলেই ২০২২ সালে ইরানে বড় আকার নেয় হিজাব বিতর্ক। উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে ইজরায়েলের সঙ্গে সংঘাত তীব্র হয়েছে ইরানের। ফলে রাইসির মৃত্যুতে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। প্রশ্ন উঠেছে, এটা নিছকই দুর্ঘটনা নাকি এর পিছনে রয়েছে কোনও ষড়যন্ত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.