সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে নৃশংস হামলার (Pahalgam Terror Attack) জেরে পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে ভারত-পাক সম্পর্ক! এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি রয়েছে। কিন্তু পহেলগাঁও হামলার জেরে সেই সব চুক্তি বাতিল করে পাকিস্তানের সঙ্গে অসহযোগিতার পথে হাঁটতে পারে নয়াদিল্লি। ভারত এমন সিদ্ধান্ত নিলে বড়সড় সমস্যায় পড়বে প্রতিবেশী পাকিস্তান। সবমিলিয়ে পাকিস্তানকে ভাতে মারার ছক করছে নয়াদিল্লি, এমনটাই মত বিশ্লেষকদের।
সেই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে সিন্ধু জলচুক্তি (Indus Water Treaty)। ৯ বছরের আলোচনার পরে ১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সিন্ধু জলচুক্তি সই করে ভারত ও পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভারত ওই জল ব্যবহার করলেও তা আটকাতে পারবে না পাকিস্তান। সেই চুক্তি থেকে ভারত যদি সরে আসে, তাহলে গোটা পাকিস্তানের জল সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
দীর্ঘদিন ধরেই নয়াদিল্লির দাবি ছিল, সিন্দু জলচুক্তিতে সংশোধন করতে হবে। কারণ ভারতের নদীবাঁধ দেওয়া ইসলামাবাদের প্রবল আপত্তি। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নালিশ জানানো পাকিস্তানের কূটনৈতিক কৌশল হয়ে ওঠে। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে এই চুক্তিতে সংশোধন চেয়ে ইসলামাদকে কড়া নোটিসও পাঠায় ভারত। তবে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা যেভাবে পহেলগাঁওয়ে হামলা চালিয়েছে, তারপরে বিশ্লেষক মহল মনে করেছিল, এবার সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে ভারত। বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু চুক্তি বাতিল করা হল। যতদিন না পর্যন্ত পাকিস্তান সীমান্ত সন্ত্রাস থামাচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এই চুক্তি কার্যকর থাকবে না।
সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল হয়ে গেলে অকূল পাথারে পড়বে পাকিস্তান। সেদেশের ৮০ শতাংশ কৃষিজমিতে জল সরবরাহ হয় এই চুক্তির মাধ্যমে। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জলের ৯০ শতাংশেরও বেশি আসে সিন্ধু নদ থেকে। করাচি, মুলতান, লাহোরের মতো বড় শহরগুলিতেও সিন্ধু নদের জলই ব্যবহৃত হয়। তারবেলা এবং মাংলার জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চলে সিন্ধুর জল থেকেই। গম, চাল, আখ, তুলো চাষ এবং পাকিস্তানের জিডিপির ২৫ শতাংশ নির্ভর করে এই সিন্ধুর জলের উপরেই। তাই এই চুক্তি মোতাবেক জল না পেলে পাকিস্তানের কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, জনজীবন-সবই থমকে যাবে। যেহেতু পাকিস্তানে প্রবল জল সংকট, তাই সিন্ধু নদের জল না পেলে কার্যত শুকিয়ে যাবে দেশের বিরাট অংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.