সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চারদিকে কান ফাটানো গোলা-গুলির আওয়াজ। বারুদের গন্ধে ভারী বাতাস। ভাঙা বাড়ির নিচে আটকে রয়েছে মৃতদেহ। গত ৭ মাস ধরে হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধে গাজার এই ধবংসের ছবি দেখছে বিশ্ব। কিন্তু এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মাঝেও পণবন্দি এক ইজরায়েলি তরুণীকে নাকি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল এক হামাস জঙ্গি। এমনকি চেয়েছিল সন্তানও। ৫০ দিনের বন্দিদশা কাটিয়ে ইজরায়েলে ফিরে সেই অভিজ্ঞতাই শোনালেন ওই তরুণী।
বৃহস্পতিবার হামাসের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন নোগা ওয়েইজ। গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে বেনজির হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠনটি। সেদিন জেহাদিরা দুশোর উপর ইজরায়েলিকে পণবন্দি বানিয়ে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নোগাও। সম্প্রতি বন্দিদের ফেরানো নিয়ে হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে সমঝোতা হয়। সেখান থেকেই মুক্তি পান নোগা। অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনামিকায় রয়েছে একটি আংটি। যুদ্ধের মাঝে কীভাবে সেটি পেয়েছিলেন নোগা?
বন্দি দশায় যখন প্রাণ থাকা নিয়ে ছিল প্রশ্ন, খাদ্য-পানীয়ের দেখা ছিল না তখনই নোগার হাতে এসেছিল ওই আংটি। সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়ে ইজরায়েলি তরুণী জানিয়েছেন, বন্দি অবস্থার ১৪ দিনের মাথায় এক হামাস জঙ্গি তাঁকে ওই আংটি দিয়েছিল। সেসময় কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না নোগা। মন থেকে না চাইলেও সেদিন হাসতে হয়েছিল। অন্তত সেই হাসিটুকু দেখে যাতে তাঁর মাথায় গুলি না চালায় সেই জঙ্গি। তার পর নানা সময়ে প্রেম প্রকাশ করেছিল ওই জঙ্গি। জানিয়েছিল, নোগার সঙ্গে ঘর বেঁধে সন্তানসন্ততি পালন করতে চায় সে। প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার পর থেকে আরও প্রায় দেড় মাস এক ডেরাতেই ছিল তারা।
জানা গিয়েছে, গত অক্টোবর মাসে নোগার বাবা ইয়ান এমারজেন্সি স্কোয়াডে যোগ দিতে কিবুৎজে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আর ফেরেননি। পরে তাঁর মৃত্যুর খবর মেলে। তা রপর থেকে নোগা আর তাঁর মা বাড়িতে একাই থাকতেন। ইজরায়েলে ঢুকে যখন হামাস জঙ্গিরা হানা দিয়েছিল নোগার বাড়িতেও। অন্তত ৪০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল তাঁদের দরজায়। তখন ভয়ে কাঁপছিলেন মা ও মেয়ে। জেহাদিদের গুলি থেকে বাঁচতে নোগার মা পরামর্শ দিয়েছিলেন খাটের তলায় লুকিয়ে থাকার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। নোগাকে তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। তার পর থেকে বহুবার ডেরা বদল হয়েছে তাঁর। এখন সেই ভয়ংকর দিনগুলোর অভিজ্ঞতাই তাড়া করে বেড়াচ্ছে বছর আঠারোর নোগাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.