সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) জন্ম কোথায়? একথা বললেই বিশ্বের সিংহভাগ মানুষই অক্লেশে বলে দেবে চিনের (China) ইউহান শহরেই প্রথমবার দেখা মিলেছিল কোভিড-১৯ (COVID-19) তথা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির। সেটি ল্যাবরেটরিতে তৈরি, নাকি প্রাকৃতিক তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু উৎপত্তি যে ইউহানেই সে ব্যাপারে সকলেই প্রায় কমবেশি নিঃসংশয়। এমতাবস্থায় পুণের (Pune) এক বিজ্ঞানী দম্পতি অন্যরকম দাবি করলেন।
ড. রাহুল বাহুলিকার এবং ড. মোনালি রাহালকার নামে ওই দুই বিজ্ঞানী তুলে ধরেছেন ২০১২ সালের একটি ঘটনার কথা। তাঁরা জানিয়েছেন, সারা পৃথিবীর মানুষের দুর্ভোগ দেখেই তাঁরা ঠিক করেন খুঁজে বের করে দেখবেন এই মারণ ভাইরাসের উৎস। আর খুঁজতে খুঁজতেই তাঁরা খুঁজে বের করেন RATG13 ভাইরাসকে, যাদের নোভেল করোনা ভাইরাসের ‘নিকটাত্মীয়’ বলাই যায়।
ঠিক কী জানিয়েছেন তাঁরা? তাঁরা জানাচ্ছেন, খুঁজতে খুঁজতে তাঁরা এমন নথি পেয়েছেন যা থেকে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে দক্ষিণ চিনের মোজিয়াংয়ের তামা খনিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৬ জন খনিকর্মী। তাঁদের শরীরে যে উপসর্গ দেখা গিয়েছিল তার সঙ্গে করোনার উপসর্গ মিলে যায়। ওয়াল স্ট্রিটের এক জার্নাল থেকে তেমনটাই জানতে পেরেছেন ওই দম্পতি।
জানা গিয়েছে তাঁদের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বাদুড়ের মল থেকে। বাদুড়ের মল শুকনো। ধরলেই তা গুঁড়ো হয়ে যায়। কেউ তার উপর দিয়ে হেঁটে গেলে তা উড়ে বাতাসে মিশে যায়। ওই খনিতে বাদুড়ের মল ভরে ছিল বলে জানা গিয়েছে।
অসুস্থ খনিকর্মীদের জ্বর, সর্দি ও রক্ত জমাট বাঁধার উপসর্গ ছিল। পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে ছিল ক্লান্তিবোধের মতো উপসর্গও। সেই সঙ্গে ফুসফুসে সংক্রমণ। এৱ সবগুলির সঙ্গেই করোনার উপসর্গের আশ্চর্য মিল। ওই সংক্রমিত কর্মীদের মধ্যে তিনজন মারাও যান।
রাহালকারের দাবি, বিশ্বজুড়ে কোভিড রোগীদের রেডিয়োলজিক্যাল রিপোর্ট আর মোজিয়াংয়ের ৬ জন খনি শ্রমিকের রিপোর্ট একই। ২০২০ সালের মে মাসেই তাঁরা এসম্পর্কিত একটি ছোট গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন রাহালকার। পরে তাঁদের সঙ্গে ‘দ্য সিকার’ নামে এক টুইটেরাত্তির যোগাযোগ হয়। তিনিও জানান, এবিষয়ে গবেষণা করে একই তথ্য তাঁর কাছেও এসেছে। এমনকী, ওই আক্রান্তদের যে ওষুধ দেওয়া হয়েছিল তাও করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের মতোই।
এছাড়াও ‘চিনের করোনার ডাক্তার’ নামে পরিচিত পালমনোলজিস্ট ঝং নানশানের কথাও উল্লেখ করেছেন ওই দম্পতি। তাঁর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কথা হয়েছে বিজ্ঞানী যুগলের। সেই ডাক্তারও মেনে নিয়েছিলেন, ওই খনিশ্রমিকদের অসুস্থতার পিছনে ছিল ভাইরাসের সংক্রমণই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.