সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কত ঘণ্টায় এক দিন? ২৪ ঘণ্টাই বলুন বা ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডই বলুন, নম্বর পাবেনই। কিন্তু প্রশ্ন যদি এমন হয়, শনিতে কত ঘণ্টায় এক দিন? উঁহু… মনে পড়ছে না তো? সেটাই স্বাভাবিক। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও, কেউ আপনার সাধারণ জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলবে না। কারণ, হিসেবটা স্পষ্ট হয়েছে এই সবেমাত্র।
নাসার মহাকাশযান ক্যাসিনি দীর্ঘদিন ধরে শনির বলয় ধরে গবেষণা এই হিসেবই করছিল। কিন্তু মহাকাশে ক্যাসিনির দুর্ঘটনার পর অঙ্ক কষার কাজ অনেকটা পিছিয়ে পড়ে। শনিবার শনিতে সেই অঙ্কের উত্তর মিলল। শনি গ্রহের দিনরাতের মাপ পৃথিবীর চেয়ে অনেকটাই কম। পৃথিবীতে ২৪ ঘণ্টায় একটা দিন, শনিতে মাত্র সাড়ে ১০ ঘণ্টায় কেটে যায় দিন। আরও সুস্পষ্টভাবে বললে – ১০ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে। নাসার গবেষক ক্রিস্টোফার ম্যানকোভিচের কথায়, ‘হিসেবটা জটিল হয়ে যাচ্ছিল শনির বলয়ের জন্য। পৃথিবী বা জুপিটারের অক্ষ বরাবর কাজ করে চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি। কিন্তু শনির চারপাশে এত বলয় থাকায়, কোন বলয় বরাবর অক্ষের ঘূর্ণন হয়, সেটা বোঝা মুশকিল। গ্রহের আবর্তনের সময় বলয়ের সঙ্গে অক্ষের ঘূর্ণন মিশে যায়। ক্যাসিনি থেকে পাওয়া তথ্যগুলো নিয়ে আমি শনির একটি মডেল তৈরি করি। গবেষণায় চৌম্বক ক্ষেত্রকে ধরেই সঠিক অক্ষ খুঁজে পাওয়া যায়। এরপরই আমরা অঙ্কের উত্তর বের করে ফেলি।’ প্রজেক্টের অন্যতম সদস্য লিন্ডা স্পিলকার বলছেন, ‘ওই বলয়েই লুকিয়ে ছিল সমস্ত অঙ্ক। বলয়ের এক একটি কণার কম্পন ধরে আমরা হিসেব এগিয়ে নিয়ে যায়। অনেক লম্বা পদ্ধতি ছিল। এই ফলাফলে ভুলত্রুটি নগণ্য বলে আমরা মনে করছি।’ শনির দিনরাত নিয়ে সদ্যপ্রাপ্ত তথ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের বিস্তারিত অঙ্ক, ফরমুলা সহ প্রকাশ করা হবে নাসার তরফে। যাতে ভবিষ্যতে শনি সম্পর্কিত গবেষণার ক্ষেত্রে এই মৌলিক বিষয়টি সকলের হাতে থাকে।
[সাধারণের মতো লাইনে দাঁড়ালেন বিল গেটসকেও! কেন জানেন?]
নাসার তরফে ক্যাসিনি মহাকাশযান ১৩ বছর ধরে শনিতে ঘুরেফিরে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিল। তার পাঠানো তথ্য থেকে এর আগে বলয় সম্পর্কেই ধারণা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ২০১৫র সেপ্টেম্বরে, ক্যাসিনির জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় মাঝপথে ভেঙে পড়ে মহাকাশযানটি। তাতেই কিছুটা বাধা পড়ে গবেষণায়। কিন্তু তরুণ গবেষক ক্রিস্টোফার ম্যানকোভিচের উদ্যোগ, পরিশ্রমে শনির মডেল তৈরি হওয়ায় এবং ক্যাসিনির পাঠানো তথ্য হাতে থাকায় তা পরবর্তী সময়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নাসার গবেষকদলের পক্ষে। দিনরাতের হিসেব স্পষ্ট হওয়া নাসার কাছে বড় সাফল্য তো বটেই। প্রাথমিক এই তথ্যের ফলে শনি সম্পর্কে পদার্থবিজ্ঞানের আরও কিছু অঙ্কের উত্তর সহজে মিলবে বলে আশাবাদী গবেষকরা। আর শনির এই তথ্য পেয়ে পৃথিবীর মানুষের সাধারণ জ্ঞানের পরিধি কিছুটা বাড়ল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.