সুকুমার সরকার: রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফের বিপাকে মায়ানমার। এবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়টির উপর চলা ভয়াবহ নির্যাতনের কথা মেনে নিল আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত (আইসিজে)। বৃহস্পতিবার, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নাইপিদাওকে নির্দেশ দিল আন্তর্জাতিক আদালত।
আদালত জানিয়েছে, মায়ানমারের বিরুদ্ধে ভিয়েনা কনভেনশন ভাঙার প্রমাণ মিলেছে। শুধু তাই নয়, প্রাণ হাতে করে সে দেশে যে রোহিঙ্গারা রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের উপর সামরিক বাহিনীর অত্যাচারের আশঙ্কা এখনও অত্যন্ত বেশি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, কাউন্সিলর আং সান সু কি-র সওয়াল সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়েছে আইসিজে। একদা শান্তির নোবেলজয়ী যুক্তি দিয়েছিলেন, সন্ত্রাসবাদ দমন করতে বিচ্ছিন্ন ঘটনায় কয়েকজন সাধারণ মানুষের প্রাণ গেলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাউকে খুন করেনি টাটমাদাও (বার্মিজ সেনা)। সে সওয়াল যে বিশেষ কল্কে পায়নি তা এদিন বুঝিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত। আইসিজের প্রিসাইডিং বিচারক আবদুলকাউয়ি ইউসুফ সরাসরি ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা’ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বলা হয়, ‘১৮৪৮ সালের কনভেনশনে যে সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তা মেনে চলতে মায়ানমারকে সমস্ত পদক্ষেপ করতে হবে।’ আপাতত তাই এই ‘নিরাপত্তামূলক সাময়িক পদক্ষেপের’ নিদান।
উল্লেখ্য, সংখ্যালঘুদের গণহত্যার অভিযোগ এনে গতবছর আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে (ICJ) মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় দয়ের করে গাম্বিয়া। জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় আইসিজে-তে ৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল ওই দেশ। সেখানে মায়ানমারের রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে রাখাইন প্রদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে খুন, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে। সেই মামলা লড়ার জন্য প্রশাসক আং সান সু কি’র নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়। এদিকে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রায় নুয়ে পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। তবে, নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে ফের রাখাইন প্রদেশে ফিরতে নারাজ রোহিঙ্গারাও। তাঁদের অভিযোগ, ফিরে গেলে ফের হামলা চালাবে বার্মিজ সেনা। সেক্ষেত্রে শরণার্থী হয়ে থাকলে অন্তত প্রাণে বাঁচতে পারবেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.