Advertisement
Advertisement
US citizenship

কঠোর অভিবাসন নীতি, নাগরিকত্ব পেতে নাবালক সন্তানদের মার্কিন সীমান্তে ফেলে আসছেন ভারতীয়রা!

মাত্র ৬ বছরের শিশুকেও সীমান্তে ফেলে যাচ্ছেন তাদের বাবা-মা।

Indians abandon their children at US border for citizenship

প্রতীকী ছবি

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:May 5, 2025 2:02 pm
  • Updated:May 5, 2025 2:04 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির জেরে মার্কিন নাগরিকত্ব কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে ভিনদেশিদের জন্য। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের নাবালক সন্তানদের মার্কিন সীমান্তে ফেলে আসছেন ভারতীয় দম্পতিরা। জানা যাচ্ছে, সন্তানদের মাধ্যমে সহজে মার্কিন গ্রিন কার্ড পেতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করছেন অনেকে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

জানা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে এখনও পর্যন্ত মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনী এমন ৭৭ জন শিশুকে আটক করেছে। যাদের মধ্যে ৫৩ জনকে মেক্সিকো ও ২২ জনকে কানাডা সীমান্ত থেকে উদ্ধার করা হয়। পরিবারচ্যুত ওই শিশুদের কাছে পাওয়া গিয়েছে এক টুকরো কাগজ যাতে লেখা তাদের বাবা-মায়ের নাম। যাদের আটক করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগের বয়স ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। কিছু ক্ষেত্রে আবার মাত্র ৬ বছরের শিশুকে সীমান্তে ফেলে গিয়েছেন তাদের বাবা-মা। জানা যাচ্ছে, এই শিশুদের গ্রিন কার্ড পাওয়ার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন দম্পতিরা। এই ধরনের ক্ষেত্রে পরিত্যক্ত ওই শিশুদের মানবিকতার খাতিরে ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে গ্রিন কার্ড দেয় আদালত। এরপর আমেরিকায় থাকা তাদের আত্মীয়রা ওই শিশুদের দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। সেক্ষেত্রে শিশুর বাবা-মা শিশুর দেখভালের জন্য গ্রিন কার্ড পেয়ে যান। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বাবা-মা মার্কিন নাগরিক হওয়ায় সন্তানরাও যাতে মার্কিন নাগরিকত্ব পায় তার জন্য এই পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে।

Advertisement

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুজরাটে বেশ কয়েকটি পরিবার মার্কিন নাগরিকত্ব পেতে এই বিপজ্জনক পথ অবলম্বনের কথা স্বীকার করেছেন। মেহসানার এক আইনজীবী ও তাঁর স্ত্রী করোনাকালে অবৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করেছিলেন। সেই সময় তাঁদের দুই বছরের সন্তানকে ভারতে রেখে যান তাঁরা। তিন বছর পর তাঁদের পরিবারের আর একজন ওই শিশুকে নিয়ে অবৈধভাবে আমেরিকায় পৌঁছয়। এবং টেক্সাস সীমান্তে শিশুটিকে ফেলে আসে। শিশুটির কাছে তার বাবা মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য-সহ একটি চিরকুট পাওয়া যায়। উদ্দেশ্য শিশুটিকে হাতিয়ার করে মার্কিন গ্রিন কার্ড আদায় করা। এক্ষেত্রে ওই পরিবারের দাবি, শিশুরা যদি অল্প বয়সে আমেরিকা পৌঁছয় এবং সেখানকার নাগরিক হয়, সেক্ষেত্রে আমেরিকার স্কুলে পড়তে পারবে তারা। সেখানে চাকরির মাধ্যমে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি হবে। প্রশাসনের তরফে জানা যাচ্ছে, ২০২৪ সালে এমন ৫১৭ জন শিশুকে আটক করা হয়। ২০২৩ সালে এই সংখ্যাটা ছিল সর্বাধিক। ওই বছর ৭৩০ জন শিশুকে আটক করা হয়।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর এই ধরনের অবৈধ অভিবাসন পদ্ধতি রুখতে তৎপর হয়ে উঠেছে মার্কিন প্রশাসন। এই ধরনের শিশুদের খুঁজে বের করে তাদের নির্বাচন অথবা তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ছাড় পাবে না শিশুদের বাবা-মায়েরাও। আমেরিকার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এইসব শিশুদের খুঁজে বের করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। চলতি বছর এইসব শিশুদের আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য সরকারি তহবিল কমিয়ে দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। শুধু তাই নয়, সীমান্তে শিশুদের পরিত্যাগ করলে তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ আইন পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে মার্কিন প্রশাসন। সম্প্রতি এই ঘটনায় এক মার্কিন নাগরিককে হন্ডুরাসে নির্বাসিত করা হয়। তবে তাঁর দুই বছরের শিশুকে ফেরত পাঠানোর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি মার্কিন প্রশাসনের তরফে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement