সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে হিজাব বিরোধী আন্দোলনের তীব্রতা যতই বাড়ছে, ততই বাড়ছে ইরান (Iran) প্রশাসনের দমননীতি। সোমবার একসঙ্গে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইরানের আদালত। সবমিলিয়ে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে (Anti Hijab Protest) যুক্ত থাকার কারণে ১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগেই দুই কিশোরকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে আদালত। চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকর হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা থেকে শুরু করে ইরানের সাধারণ মানুষ– মৃত্যুদণ্ডের আদেশের বিরোধিতায় সরব হয়েছে সকলেই। তবে নিজেদের অবস্থানে অনড় ইরানের কট্টরপন্থী প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, সালে মীরহাশেমি, মাজিদ কাজেমি ও সইদ ইয়াঘুবি নামে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ইরানের আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিবাদ কর্মসূচি থামাতে যাওয়া নিরাপত্তাকর্মীদের হত্যা করেছেন ওই তিনজন। বরাবরের মতোই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অভিযোগও আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। তাই শরিয়তি আইনের ভিত্তিতেই তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইরানের একটি মানবাধিকার সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে, আগামী দিনে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেতে পারেন অন্তত ১০৯ জন প্রতিবাদী।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই দুই কিশোরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ইরানের আদালত। ১৮ বছর বয়সি মেহদি মহম্মদিফার্দ ও ১৯ বছরের কিশোর মহম্মদ বরোউনি– দু’জনেই হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। জলের বোতলে পেট্রল ভরে ক্ষতিকারক মলোটোভ ককটেল বানাচ্ছিল দুই কিশোর, এই অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। তবে উচ্চতর আদালতে আবেদন জানানোর সুযোগ রয়েছে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। যদি এই আদেশ কার্যকর হয়, তাহলে হিজাব বিরোধী আন্দোলনের সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে দুই কিশোরকে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই হিজাব বিতর্কে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা ইরান। হিজাব না পরার কারণে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই হিজাব বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদ জানিয়ে পথে নামেন ইরানের সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদে সরব হন সেদেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও। কিন্তু প্রতিবাদীদের থামাতে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করে খোমেইনির প্রশাসন। শুধুমাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে একাধিক প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.