সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েল-সংযুক্ত আরব আমিরশাহী শান্তিচুক্তি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে ইরান। তেহরানের অভিযোগ, ইহুদি দেশটির সঙ্গে শান্তি স্থাপন করে প্যালেস্তিনীয়দের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আমিরশাহী। এর জন্য দেশটিকে হামলার মুখে পড়তে হতে পারে।
রবিবার ইরানের সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ‘কেহান’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে হামলার হুমকি দিয়ে সাফ বলা হয়েছে, “প্যালেস্তিনীয়দের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার ফলে এই ছোট্ট অথচ বিত্তবান দেশটি বৈধ কারণেই ইরানের হামলার নিশানায় রয়েছে।” উল্লেখ্য, এই সংবাদপত্রটির সম্পাদক পদে যিনি রয়েছেন তাঁকে নিযুক্ত করেছেন খোদ ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই। ফলে সেখানে প্রকাশিত প্রতিবেদনের হুমকি যে খামেনেইর মুখের কথা তা বলাই বাহুল্য। মার্কিন পৌরহিত্যে তেল আভিভ ও আবু ধাবির মধ্যে শান্তি স্থাপন হওয়া নিয়ে সুর চড়িয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানিও।
এদিকে, ইরান ফাকা হুমকি দিচ্ছে না বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা। মার্কিন বিশেষজ্ঞ থিওডর কারাসিক জানিয়েছেন, তেহরানের হুমকিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। ভুলে গেলে চলবে না যে ইরানের মিসাইলগুলি মাত্র ৮ মিনিটেই আমিরশাহীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আরব দুনিয়ায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে মার্কিন পৌরহিত্যে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করল ইজরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। আর একযোগে ইরানকে ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ।এটি ইজরায়েলের সঙ্গে তৃতীয় কোনও আরব রাষ্ট্রের শান্তি চুক্তি। এর আগে মিশর ১৯৭৯ সালে এবং জর্ডন ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে। নয়া চুক্তি মোতাবেক, ইজরায়েলকে (Israel) একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। প্রতিদানে প্যালেস্তাইনের ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এলাকা অধিগ্রহণ করার পরিকল্পনা বাতিল করবে ইহুদি দেশটি। উল্লেখ্য, কয়েক দশকের সংঘাতে ইতি টেনে মিশর ও জর্ডনের পর আরব দুনিয়ার তৃতীয় দেশ হিসেবে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। এর ফলে এবার থেকে তেল আভিভের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন মেনে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে আবু ধাবি।
বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকার মিত্রদেশগুলির মধ্যে অন্যতম ইজরায়েল (Israel) ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী (UAE)। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানকে রুখতে এই দুই দেশ আমেরিকার অন্যতম হাতিয়ার। তাই বিবাদ মেটাতে পর্দার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরেই শান্তি আলোচনার পক্ষে ওয়াশিংটন-তেল আভিভ-আবু ধাবির। তারই ফল এই শান্তিচুক্তি। আর একযোগে ইরানকে ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ। কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ইজরায়েলের সঙ্গে এতদিন পর্যন্ত কোনও উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রের কূটনৈতিক ছিল না। উপসাগরীয় অঞ্চলে চালকের আসনে রয়েছে সৌদি আরব। ফলে এই চুক্তিতে যে রিযাধের সম্মতি রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। সব মিলিয়ে এবার ইহুদি বনাম আরব দ্বন্দ্ব অনেকটাই মিটবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.