সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিতর্কে উত্তাল ইরান (Iran)। বিক্ষোভে অংশ নিতে গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। তবু রোখা যাচ্ছে না প্রতিবাদের ঢেউ। কিন্তু যে মহিলা সাংবাদিকের তোলা ছবি থেকেই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, বন্দি হয়ে রয়েছেন জেলের অন্ধকার কুঠুরিতে। সেই সাংবাদিক নিলুফার হামেদির বিরুদ্ধে কিন্তু কোনও অভিযোগ নেই। তবুও তাঁকে সেদেশের ইভিন জেলের একটি আলাদা সেলে রেখে দেওয়া হয়েছে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর টুইটারে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন নিলুফার। ছবিটি ছিল মাহসা আমিনির অভিভাবকদের। তেহরানের হাসপাতালে কোমায় চলে যাওয়া ২২ বছরের মেয়ের মা ও বাবা সেই সময় পরস্পরকে সাহস জোগাতে অসহায় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই পরিষ্কার হয়ে যায়, ইরানে কী ঘটছে। এরপর মাহসার মৃত্যুর পর তো বিক্ষোভের স্ফূলিঙ্গ থেকে দাবানল সৃষ্টি হয়ে যায়। কিন্তু সেই আন্দোলনের সূচনাবিন্দুটি নিলুফারেরই তৈরি।
বরাবরই সাংবাদিক হিসেবে ডাকাবুকো নিলুফার। অতীতেও অনেক বড় খবর ‘ব্রেক’ করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবারের মতো তা প্রভাব ফেলতে পারেনি। তারই ‘পুরস্কার’ বিনা অভিযোগের এই হাজতবাস। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি বন্দি। তাঁর বন্দি হওয়ার খবর টুইট করে সবাইকে জানিয়েছিলেন আইনজীবী মহম্মদ আলি কামফিরৌজি। জানিয়েছিলেন, গোয়েন্দা কর্মীরা এসে ঘর তছনছ করে তল্লাশি চালায়। তারপর গ্রেপ্তার করে নিলুফারকে।
এদিকে দেখতে দেখতে তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে হিজাব বিরোধী আন্দোলনের। কিন্তু প্রতিবাদের আঁচ এখনও কমার নাম নেই। প্রশাসনের দমন-পীড়নে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮৫ জন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন নাবালক-নাবালিকা। উল্লেখ্য, বছর বাইশের মাহসা আমিনিকে (Mahsa Amini) নীতি পুলিশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি ওই তরুণীকে মারধর করা হয়নি। গ্রেপ্তারের পরে অসুস্থ হন তিনি। আক্রান্ত হন হৃদরোগে। হাসপাতালে মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হয় আন্দোলনের। রাজপথে নেমে আসে কাতারে কাতারে মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.