সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জায়গা খালি করার হুমকির পরই রাফায় হামলা শুরু করল ইজরায়েলি ফৌজ! সোমবার পূর্ব রাফার দুটি এলাকায় আঘাত হানে ইজরায়েলের বিমানবাহিনী। এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছেন গাজার অসামরিক প্রতিরক্ষার আধিকারিকরা। কিন্তু এই মুহূর্তে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় যাবেন রাফার প্যালেস্তিনীয়রা? এটাই যে তাঁদের ‘শেষ আশ্রয়’। এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে পদক্ষেপ করার জন্য আরব বিশ্বের কাছে কাতর আর্জি জানাচ্ছেন ঘরছাড়ারা।
আন্তর্জাতিক মহলের চাপ উপেক্ষা করে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। লক্ষ্য একটাই। হামাস জঙ্গিদের সমূলে নিধন। আর তার জন্য রাফায় (Rafah) ঢুকে অভিযান শুরু করতেই হবে ইজরায়েলি বাহিনীকে। এবার নাকি তারই সময় এসে গিয়েছে। রয়টার্স সূত্রে খবর, রবিবার রাফার আল-শুকা এবং আল-সালামেরের বাসিন্দাদের এলাকা ছেড়ে ক্যাম্পে চলে যাওয়ার কথা বলেন ইজরায়েলের জওয়ানরা। তার পরই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পরিবার নিয়ে ছোটাছুটি শুর করেন সেখানকার বাসিন্দারা। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওই দুটি জায়গায় হামলা চালাল ইজরায়েল। কিন্তু এই গোলাগুলির মাঝেই ভারী বর্ষণ পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।
প্রবল বৃষ্টিপাতে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছেন রাফায় আশ্রয় নেওয়া লক্ষ লক্ষ শরণার্থীরাও। তেমনই একজন আবু রায়েড রয়টার্সকে জানিয়েছেন, “ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আমরা জানি না পরিবার নিয়ে কোথায় যাব।” রাফার ভয়ানক পরিস্থিতি নিয়ে আরব দুনিয়ার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এক ঘরছাড়া প্যালেস্তিনীয় আমিনাহ আদওয়ান। তাঁর কাতর আর্জি, “এটা সবচেয়ে বড় গণহত্যা। সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। আমি গোটা আরব বিশ্বের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কিছু করুন। এই নরকযন্ত্রণা থেকে আমাদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন।”
কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছিল, রাফার মানুষদের জন্য ৪০ হাজার তাঁবুর ব্যবস্থা করেছে ইজরায়েলের সরকার। সেখান থেকে প্যালেস্তিনীয়দের সরিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সেনা। এর জন্য ইজরায়েলের ওয়ার ক্যাবিনেটে জোরদার আলোচনা চলছে। অনুমোদন পেলেই আগামী এক মাসের মধ্যে তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হবে। রাফায় ঢুকে অভিযান শুরু করা নিয়ে এর আগে বহুবার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে আমেরিকা। গোটা রাফাজুড়ে হামলা না চালিয়ে অন্য পথে হামাস জঙ্গিদের নিকেশ করার পথ খুঁজতে বলেছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু কোনও কথাতেই কর্ণপাত করেননি নেতানিয়াহু।
এদিকে, রাফায় ইজরায়েলি সেনার অভিযান নিয়ে নেতানিয়াহুর প্রশাসনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে মিশর। কায়রো সাফ জানিয়ে দিয়েছে, রাফায় হামলা শুরু হলে কোনও প্যালেস্তিনীয়কে সীমান্ত পেরিয়ে মিশরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে, ইজরায়েলের এই অভিযানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। প্রাণ হারাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ। রাফাকে সম্পূর্ণ ধবংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তেল আভিভ। এর ফল ভুগতে হবে ইজরায়লকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.