সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন মারব, আবার শুশ্রূষাও করব। গত ১০ সপ্তাহ ধরে গাজা অবরুদ্ধ করে সেখানে অভিযান চালিয়েছে ইহুদি সেনা। লাগাতার অভিযানে গাজাকে কার্যত নরকে পরিণত করার পর এবার সেখানে ‘মানবিক সাহায্য’ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল ইজরায়েল। গাজার ভয়াবহ খাদ্য সংকট নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বিশ্ব। এই পরিস্থিতিতেই গাজায় ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী জানান, দুর্ভিক্ষে জর্জরিত গাজায় নতুন কোনও সামরিক অভিযান ইজরায়েলকে সমস্যায় ফেলতে পারে। ফলে ২৩ লক্ষ জনসংখ্যার এই অঞ্চলে খাদ্যের মতো সীমিত মৌলিক সহায়তার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গাজার মাটি থেকে হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীকে পুরোপুরি উপড়ে ফেলতে গোটা অঞ্চল ঘিরে সামরিক অভিযান চালাতে শুরু করেছে ইজরায়েল। মার্চের শুরুতে গাজা অবরোধ করে, খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। গত রবিবার ইজরায়েলের সামরিক অভিযানে মৃত্যু হয় ১৫১ জনের। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় ইন্দোনেশিয়ান এক হাসপাতাল ঘিরে অভিযান চলছে। এখানে একাধিক হামাস জঙ্গি ঘাঁটি গেড়েছে বলে দাবি ইজরায়েলের। একদিকে যখন এই অভিযান চলছে, ঠিক সেই সময় আন্তর্জাতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়, অন্তত ৫ লক্ষ গাজাবাসী ভয়ংকর খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। অত্যন্ত গুরুতর অবস্থা আরও ১০ লক্ষের। এই পরিস্থিতির মাঝেই গাজায় ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দিলেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
সোমবার ক্যাবিনেট বৈঠকের পর ইজরায়েলের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, শুধুমাত্র খাদ্য সংকটের মেটাতে গাজাতে ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে সেই ত্রাণসামগ্রী যাতে হামাসের হাতে না পৌঁছয় তা নিশ্চিত করবে ইজরায়েল। যদিও কখন এবং কীভাবে এই ত্রাণ যাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তিন মাস অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে এই মানবিক সহায়তা গাজাবাসীকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে গত তিন মাসে ইজরায়েলের হামলায় গাজায় ৩,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে। শুধুমাত্র এই শনি ও রবিবার গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৫১ জন নিহত হয়েছেন। শুধুমাত্র দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে ৪৮ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। এই হামলা চালানো হয় বাস্তুচ্যুত মানুষের বাড়িঘর এবং তাঁবুতে। যারা মারা গিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.