সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরেই অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের (Brahmaputra) উপরে ‘মেগা ড্যাম’ তৈরি করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে চিন। বেজিংয়ের দাবি ওখানে তারা নির্মাণ করছে পৃথিবীর সবথেকে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধ (Dam)। চিনের (China) এক সরকারি আধিকারিক প্রস্তাবিত এই বাঁধ সম্পর্কে দাবি করেছেন, ‘‘ইতিহাসে এই বাঁধ হবে নজিরবিহীন।’’ কিন্তু চিনের এমন প্রত্যাশায় ভরা বাঁধের স্বপ্ন মাটিতে তলিয়ে যেতে পারে! তেমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। গলতে থাকা হিমবাহ খুব বড় ঝুঁকি হয়ে উঠছে চিনের সামনে। সেই সঙ্গে রয়েছে ওখানে অবস্থিত কৃত্রিম হ্রদও। এই দুই ‘ঝুঁকি’ই আপাতত অস্বস্তিতে রেখেছে জিনপিং প্রশাসনকে।
গত বছরের মার্চে ওই বাঁধ তৈরিতে সবুজ সংকেত দিয়েছিল চিনের সংসদ ‘ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস’। সেদেশের চতুর্দশ পঞ্চবার্ষিকীর অন্তর্গত এই বাঁধের পরিকল্পনা ঘিরে বহুদিন ধরেই উচ্ছ্বসিত বেজিং। কিন্তু সম্প্রতি ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ নামের এক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, যে ইঞ্জিনিয়ারদের উপরে ওই বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁরা আশঙ্কা করছেন আচমকা হিমবাহে নামা ধস ও কৃত্রিম ওই জলাশয়ের কারণে ভেঙে পড়তে পারে বাঁধ।
২০১৮ সালে এমনই একটি ধসে ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার ফলে ৬০০ মিলিয়ন ঘনমিটার জলের একটি জলাশয়ও তৈরি হয়ে যায়। বর্তমানে তার উপর দিয়ে বইতে থাকা নদীর কারণে যে কোনও সময় বাঁধ ভেঙে পড়তে পারে। আর তাই মনে করা হচ্ছে এই পরিস্থিতিতে বড় বাঁধ নির্মাণ করার আগে ধসের ফলে তৈরি হওয়া ছোট বাঁধ থেকে আগে অব্যাহতি পেতে হবে।
প্রসঙ্গত, চিনের এই বাঁধকে ঘিরে উদ্বিগ্ন ভারত। ভারতের আশঙ্কা, নদীর উচ্চ গতিপথে জলাধার তৈরি করলে ভারতে জলসংকট তৈরি হতে পারে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে কৃষিকাজ। পাশাপাশি হড়পা বান কিংবা বর্ষাকালে বন্যাও হতে পারে। বরাবরই নয়াদিল্লি বেজিংয়ের এই পরিকল্পনায় বাধা দিয়ে এসেছে। এই বাঁধের বিরোধিতা করেছে বাংলাদেশও। কিন্তু চিন বারবার বোঝাতে চেয়েছে এতে অন্য দেশের কোনও সমস্যা হবে না। আপাতত প্রকৃতির রোষের কথা ভেবেই কিছুটা থমকে গিয়েছে চিনের সেই সাধের বাঁধের স্বপ্নপূরণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.