সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুড়ে খাক গ্রামের পর গ্রাম। বিদ্রোহীর আস্তানা সন্দেহে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়িঘর। গাছের তলায় রাস্তার ধারে দিন কাটাচ্ছে সেনাশাসিত মায়ানমারের বাসিন্দারা। সম্প্রতি মধ্য মায়ানমারের (Myanmar) বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের গ্রাম বিনও গুড়িয়ে দিয়েছে জুন্টা। তার পর থেকেই নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে।
আমেরিকার স্যাটেলাইট সংস্থা ‘প্ল্যানেট ল্যাব’ এবং মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত সংস্থা নাসার তরফে একের এক উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ্যে এনেছে। তাতেই উঠে এসেছে মায়ানমারের দুর্দশার ছবি। সেখানে দেখা গিয়েছে, শতাধিক গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে জুন্টা। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ঘর। নদীর ধারে বাঁশ আর ইট দিয়ে ঘর বানিয়েছিলেন বিনের (Bin Village) বাসিন্দারা। সেখানেও কুনজর পড়ে মায়ানমার সেনাবাহিনীর। রাতারাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গোটা গ্রাম। এর মাঝে শুধুমাত্র অস্তিত্ব রক্ষা করছে সোনালি প্যাগোডা।
মায়ানমারের মানবাধিকার সংক্রান্ত রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রু জানিয়েছেন, সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে। জুন্টা যদি মনে করে কোনও একটি এলাকার মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে, প্রতিবাদীদের সমর্থন করছে তাহলেই গোটা এলাকায় আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। শুধুমাত্র সন্দেহের উপর ভিত্তি করে নির্বিচারে হত্যালীলা চালানো হচ্ছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নেত্রী আং সান সু কি’র ( Aung San Suu Kyi) গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে মায়ানমারে মসনদ দখল করে ‘টাটমাদাও’ বা বার্মিজ সেনা। তারপর থেকেই সামরিক জুন্টার বিরুদ্ধে চলছে প্রতিবাদ। সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করেছে বিদ্রোহীরা। কয়েকদিন আগেই জুন্টার বিরুদ্ধে গণহত্যার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে আসে এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
ফেব্রুয়ারি মাসে ‘রেডিও ফ্রি এশিয়া’ দাবি করেছিল, গত একবছরে বিক্ষোভ দমনের নামে সাধারণ মানুষের ৪ হাজার ৫০০টি বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বার্মিজ সেনা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাগাইং প্রদেশে ২ হাজার ৫৬৭টি বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে সেনা। চিন ও মাগওয়ে প্রদেশে যথাক্রমে ৯৭৬ ও ৬২৬টি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কায়াহ, মান্দালয়-সহ একাধিক জায়গায় একই ঘটনা ঘটেছে। ওই সমস্ত জায়গায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে স্থানীয় মিলিশিয়াগুলি। ফলে প্রতিশোধ নিতেই এহেন কাজ করেছে বার্মিজ ফৌজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.