সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকভূমের সঙ্গে জেহাদের সম্পর্ক যেন অবিচ্ছেদ্য, রন্ধ্রে রন্ধ্রে সন্ত্রাসের বিষ! দেশের সেনাকর্তা যিনি, তাঁর ইতিহাস ঘাঁটলেও মেলে জঙ্গি-যোগ। বলা হচ্ছে পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশন বিভাগের ডিজি তথা লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরীর কথা, বরাবর যিনি বহির্বিশ্বের কাছে পাকিস্তানকেই জঙ্গিবাদের শিকার হিসেবে তুলে ধরেছেন। এমনকী সম্প্রতি ভারত-পাক যুদ্ধ আবহেও শরিফ চৌধুরী আন্তর্জাতিক মহলে এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন, পাকিস্তান অসহায়, দুর্বল। তাই তার উপর আক্রমণ করছে ভারত! এহেন ব্যক্তির পারিবারিক ইতিহাস কিন্তু বলছে অন্য কথা। শরিফ চৌধুরীর বাবা ছিলেন বিজ্ঞানী। পরে ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গী হয়ে বিজ্ঞানের আশীর্বাদ গ্রহণের বদলে তাকে অভিশাপের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন। রাষ্ট্রসংঘ তাঁকে অতি গুরুতর সব অভিযোগে ‘জঙ্গি’ তকমা দিয়েছিল। তাঁর পুত্রই শাহবাজ শরিফ প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য সেনাকর্তা।
সুলতান বশিরউদ্দিন মহম্মদ অর্থাৎ পাক ডিজি, আহমেদ শরিফ চৌধুরীর বাবার জীবন সিনেমার চেয়ে কিছু কম আকর্ষণীয় নয়। পেশায় তিনি ছিলেন পরমাণু বিজ্ঞানী। পরমাণুর প্রকাণ্ড শক্তিকে মানবকল্যাণের কাজে লাগাতেই পারতেন। কিন্তু জেহাদের ভূত মাথায় চাপলে সব ভালোমন্দের হিসেবই ওলটপালট হয়ে যায়! বশিরউদ্দিনেরও তাই হয়েছিল। নয়ের দশকে পরমাণু বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করতে করতে সেসময়ের কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী, বিশ্বত্রাস ওসামা বিন লাদেনের সংস্পর্শে আসেন। সখ্য এতটাই জমে উঠেছিল যে শোনা যায়, লাদেনের হাতে নাকি পরমাণু বোমা তুলে দিতেও প্রস্তুত ছিলেন বশিরউদ্দিন। এমন ‘রাজযোটক’-এ বিপদের আঁচ করেছিল রাষ্ট্রসংঘ। পাকিস্তানের বিজ্ঞানীরা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে, এই মর্মে সতর্কবার্তা দিয়ে নজরদারিও শুরু করে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
সেই স্ক্যানারে ধরা পড়েন বিজ্ঞানী বশিরউদ্দিন। ২০০১ সালে যখন লাদেনের মস্তিষ্কপ্রসূত বিস্ফোরক বোঝাই বিমান ধাক্কা দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল আমেরিকার টুইন টাওয়ার, ঠিক তার পরপর ডিসেম্বর মাসে বশিরউদ্দিনকে চিহ্নিত করে রাষ্ট্রসংঘ। লাদেনের সঙ্গী শুধু নয়, তাকে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে বশিরউদ্দিনকে জঙ্গি তকমা দিয়ে তালিকাভুক্ত করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশ গুরুতর। অস্ত্র, রাসায়নিক মারণাস্ত্র ছাড়াও আল কায়দাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা, হামলার নীল নকশা তৈরি, জেহাদিদের অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা – সব কিছুতেই একদা বিজ্ঞানীর বড়সড় ভূমিকা ছিল বলে জানায় নিরাপত্তা পরিষদ।
বাবার কীর্তি বরাবর জানতেন পাকিস্তানের আজকের লেফটেন্যান্ট জেনারেল শরিফ চৌধুরী। আর তাই বোধহয় বারবার তিনি বলতে চান, পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের শিকার। তার মাটি ব্যবহার করে সন্ত্রাসের বিষবৃক্ষ বেড়ে উঠেছে, সবচেয়ে দুর্ভোগে রয়েছেন পাকিস্তানিরাই। তবে কি বাবার পরিচয় আড়াল করতেই এই ছক? নিজেকে শিকার বলে প্রতিপন্ন করার ছলে আসলে নিজেরই জঙ্গিযোগ আড়াল করার চেষ্টা? প্রশ্নগুলো জোরাল হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.