সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন চারেক ধরে প্রবল বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত নেপাল। লাগাতার বর্ষণের জেরে ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গিয়েছে গোটা দেশ। বন্যার পাশাপাশি ব্যাপক ভূমিধসের কবলে পড়েছে নেপালের একাধিক এলাকা। ধস নেমেছে রাজধানী কাঠমান্ডুর একটি হাইওয়েতেও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বন্যা ও ভূমিধসের জোড়া ফলায় এখনও পর্যন্ত পড়শি দেশে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৯২। নিখোঁজ বহু। ফলে প্রাণহানি আরও বাড়তে বলেই আশঙ্কা।
কোথাও দুকূল ছাপিয়ে নদীর জল ধুকে পড়েছে লোকালয়ে। জলের তোলায় চলে গিয়েছে রাস্তা। ভেসে গিয়েছে ঘরবাড়ি। খেলনার মতো ভাসছে অনেক গাড়ি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, রবিবার কাঠমান্ডুর দক্ষিণ অংশের একটি হাইওয়েতে ধস নেমে একসঙ্গে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসন জানায়, যখন ধস নামে তখন সেখানে তিনটি যাত্রীবাহী গাড়ি ছিল। যেগুলো চাপা পড়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সেখান থেকে ৩৫ জন যাত্রীর দেহ উদ্ধার করা হয়।
কাঠমান্ডুর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন এখন বহু এলাকা। সেদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ঋষিরাম তিওয়ারি সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘‘কাঠমান্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করতে আমাদের উদ্ধারকারীরা কঠোর পরিশ্রম করছেন। এখনও পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষকে আমরা উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে পেরেছি। ধসের পর ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে হাইওয়ে মেরামত করার কাজও শুরু হয়েছে।’’
গত বৃহস্পতিবার থেকে নেপালে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। যার জেরে প্লাবিত হয় দেশের একাধিক শহর। তার মধ্যেই শনিবার হড়পা বানের সতর্কতা জারি করে নেপালের আবহাওয়া দপ্তর। ভয়াবহ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে জরুরি বৈঠকে বসেন নেপালের কার্যকারী প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ মান সিং। উদ্ধারকাজ আরও দ্রুত করতে নির্দেশ দেওয়া হয় মন্ত্রিসভাকে। কিন্তু বহু রাস্তা ধসে যাওয়ায় দুর্গত এলাকাগুলোতে পৌঁছতে পারছেন না উদ্ধারকারীরা। তার মধ্যে সমস্যা বাড়াচ্ছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাত পর্যন্ত তাতে নিখোঁজের সংখ্যা ৬৮। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে শতাধিক আহতের। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধারকাজে ও দুর্গতদের সাহায্যের জন্য নামানো হয়েছে তিন হাজারের বেশি নিরাপত্তাকর্মীকে। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন এলাকায় পৌঁছে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন তাঁরা। পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণসামগ্রীও।
এই বিপর্যয়ে নেপালে গিয়ে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটকও। বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে শনিবার নেপালের বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে ১৫০টি ঘরোয়া বিমান বাতিল কফ্রে দেওয়া হয়েছিল। তবে রবিবার সকাল থেকে বিমান পরিষেবা ফের স্বাভাবিক হয়। এদিকে, আজ নেপালের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় নজির গড়ে নেপালে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুধুমাত্র কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের কাছে একটি জায়গায় ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টির হিসাব পেয়েছে তারা। ২০০২ সালের পর থেকে যা কখনও হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.