সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু, খ্রিস্টান ও শিখ-সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাবালিকা ও কিশোরীদের অপহরণ নিত্যদিনের ঘটনা। এমনকী কিশোরী বা যুবতীদের বিয়ের পিঁড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর জোর করে ধর্মান্তকরণ করিয়ে বিয়ে করে মুসলিমরা। এই বিষয় নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলি প্রতিবাদ করলেও কোনও হেলদোল নেই পাক প্রশাসনের। এখন আবার এই বিষয়ে একটি বির্তকিত রায় দিলে পাকিস্তানের আদালত (Pakistan Court)। এক খ্রিস্টান কিশোরী হুমা ইউনিসকে জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে বিয়ে করেছিল এক মুসলিম যুবক। এর বিরুদ্ধে সিন্ধ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই কিশোরীর বাবা-মা। গত সোমবার এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিয়ের জন্য বয়স কোনও বিষয় নয় বলে উল্লেখ করল দুই বিচারপতি মহম্মদ ইকবাল ও ইরশাদ আলি শাহ। এই বিষয়ে তাদের নির্দেশ, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কোনও দরকার নেই। মেয়েটি ঋতুমতী হলেই বিয়ে দেওয়া যাবে। শরিয়ত আইন অনুযায়ী, এটা স্বীকৃত।
সিন্ধ হাই কোর্টের এই রায়ের কথা জানাজানি হতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। ইমরান খানের প্রশাসন পুরোপুরি ইসলামিক মৌলবাদের কবজায় চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে সেদেশের স্বেচ্ছাসেবী কয়েকটি সংগঠন। কিন্তু, তারপরও এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি সরকারের তরফে। বাধ্য হয়ে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই খ্রিস্টান কিশোরী বাবা-মা। আগামী ৪ মার্চ সিন্ধ হাই কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানির পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
ঘটনাটির সূত্রপাত হয় পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে, ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর। ১৪ বছরের হুমা ইউনিস নামে এক কিশোরীকে অপহরণ করে স্থানীয় মুসলিম যুবক আবদুল জব্বার। পরে তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিয়ে জোর করে বিয়েও করে। প্রতিবাদ জানিয়ে কোনও কাজ না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হন কিশোরীটির বাবা-মা। সিন্ধুপ্রদেশে ২০১৪ সাল থেকে চালু হওয়া বাল্য বিবাহ রোধ আইনের অধীনে এই মামলার বিচার করার আবেদন করেন। কিন্তু, তাঁদের সেই আবেদন সাড়া না দিয়ে অভিযুক্তের পক্ষ নেয় আদালতের বিচারপতিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.