সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের সঙ্গে সামরিক লড়াইয়ে নেমে কোমর ভেঙেছে পাকিস্তানের। তার উপর সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতাদেশে সিঁদুরে মেঘ দেখছে প্রতিবেশী। এই আবহে ট্রাম্পের মন পেতে নয়া ছক পাকিস্তানের। সূত্রের খবর, আমেরিকাকে নিঃশুল্ক বাণিজ্যের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের তরফে। যার ফলে পাকিস্তানের মাটিতে বাণিজ্য করতে কোনওরকম শুল্ক দিতে হবে না আমেরিকাকে। ভারতের সঙ্গে সংঘাত আবহে পাকিস্তানের এই প্রস্তাব আমেরিকাকে হাতে রাখার ছক হিসেবে দেখছে কূটনৈতিক মহল।
সম্প্রতি পাক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের তরফে আমেরিকাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট বেশকিছু পণ্য নিঃশুল্ক বাণিজ্য চুক্তির। পাক সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা এই প্রস্তাবের কথা স্বীকার করে ওই সংবাদমাধ্যমকে জানান, “পাকিস্তান একাধিক ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের জন্য চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে।” যদিও বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে দাবি ওই পাক আধিকারিকের।
উল্লেখ্য, এই প্রস্তাব এমন সময়ে এল যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনের সামরিক সংঘাতের পর দুই যুদ্ধবিরতিতে নিজের কৃতিত্ব দাবি করেছেন ট্রাম্প। তাঁর আরও দাবি ছিল বাণিজ্য বন্ধের হুঁশিয়ারিতে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের তরফে দাবি করা হয়, ভারত নাকি শুল্কবিহীন বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকাকে। যদিও ট্রাম্পের সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর জানান, “ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা চলছে। এগুলো অত্যন্ত জটিল আলোচনা। সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত পুরোটা বলা কঠিন। তবে যেকোনও বাণিজ্য চুক্তি দুপক্ষের কাছেই লাভবান হওয়া উচিত। অন্তত এই চুক্তি থেকে আমরা সেটাই আশা করি। তাই যতক্ষণ না চুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে ততক্ষণ এই বিষয়ে মতামত দেওয়া উচিত নয়।”
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের তরফে আমেরিকাকে নিঃশুল্ক বাণিজ্য প্রস্তাব প্রসঙ্গে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ভারতের বিরুদ্ধে আমেরিকাকে পাশে পেতে শাহবাজের এই পরিকল্পনা খুব বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না। তার কারণ, বাণিজ্যের বাজার হিসেবে গোটা বিশ্বের ভারতের অবস্থান পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ওপরে। তার উপর সন্ত্রাসবাদ ও আভ্যন্তরীণ নানা সমস্যায় জর্জরিত পাকিস্তান। ফলে নিঃশুল্ক বাণিজ্যের প্রস্তাব দিলেই মার্কিন সংস্থাগুলি যে পাকিস্তানে বাণিজ্য করতে যে হামলে পড়বে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। অন্যদিকে, বাণিজ্যিক নিরাপত্তায় পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ ভারত। সব মিলিয়ে কূটনৈতিক স্বার্থে বিশেষ করে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিতাদেশে ভারতের উপর চাপ বাড়াতে আমেরিকাকে পাশে পেতে চায় পাকিস্তান। তবে ভারত যে নিজের সিদ্ধান্তে অটল তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর এই প্রস্তাব পাক অর্থনীতিকে আরও বেশি সমস্যার মুখে ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.