সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাওস সফরের দ্বিতীয় দিনে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি আমেরিকায় হ্যারিকেন মিল্টনের তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। এই পরিস্থিতিতে ব্লিঙ্কেন সাক্ষাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনায় সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে দীর্ঘ বৈঠক করেন দুই রাষ্ট্র প্রধান। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের পাশাপাশি আঞ্চলিক সমস্যা মোকাবিলায় একত্রে কাজ করার বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী।
দুদিনের সফরে লাওসে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২১তম আসিয়ান-ভারত শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার সেদেশের রাজধানী ভিয়েনতিয়ানে পা রাখেন তিনি। সেখানে ভাষণ দেওয়ার পর শুক্রবার ১৯তম পূর্ব এশিয়া সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে শান্তির বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যার সমাধান খোঁজার জায়গা যুদ্ধক্ষেত্র নয়। আমি বুদ্ধের দেশ থেকে আসছি। এবং বার বার করে বলছি এই শতাব্দী যুদ্ধের নয়। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সমস্যার সমাধান আসতে পারে না। সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করা প্রয়োজন। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখে সংলাপ ও কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’ এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক সমগ্র অঞ্চলের শান্তি ও অগ্রগতির জন্যও বার্তা দেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ২১তম আসিয়ান সামিটে যোগ দিয়ে ভারতের অবদানের কথা তুলে ধরে মোদি বার্তা দিয়েছিলেন, “আমি ভারতের অ্যাক্ট-ইস্ট নীতি ঘোষণা করেছিলাম। গত দশকে, এই নীতি ভারত ও আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই জোটকে নতুন শক্তি, দিক নির্দেশ এবং গতি দিয়েছে। আসিয়ানকে প্রাধান্য দিয়ে ১৯৯১ সালে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক ওশান ইনিশিয়েটিভ চালু করি। গত বছর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সামুদ্রিক মহড়া শুরু হয়। গত ১০ বছরে, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আজ, ৭টি আসিয়ান দেশের সঙ্গে সরাসরি বিমানপথে যোগাযোগ রয়েছে ভারতের। শীঘ্রই ব্রুনেইয়েও ফ্লাইট চালু হবে। আমরা তিমুর লেস্টে নতুন দূতাবাস খুলেছি। সিঙ্গাপুর ছিল আসিয়ানের প্রথম দেশ যার সঙ্গে আমরা ফিনটেক সংযোগ স্থাপন করেছি এবং এখন এটি অন্যান্য দেশের সঙ্গেও হতে চলেছে।”
এর পাশাপাশি আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্কের কথা জানিয়ে মোদি বলেন, “আমরা শান্তিপ্রিয় দেশ। একে অপরের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি। আমরা আমাদের নাগরিকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি বিশ্বাস করি যে, একবিংশ শতাব্দী হল ভারতের। এই শতাব্দী আসিয়ান দেশগুলোর। আজ এক অদ্ভুত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্বের অনেক জায়গায় সংঘাত ও উত্তেজনা চলছে। তাই ভারত ও আসিয়ানের বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও সংলাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” এদিকে, তিন বছর হতে চললেও রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামেনি রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে। অন্যদিকে, এক বছর পূর্ণ হয়েছে গাজা যুদ্ধের। হামাস নিধনে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েল। এখন সম্মুখ সমরে ইজরায়েল-ইরান। লেবাননেও হেজবোল্লার বিরুদ্ধে সংঘাত শুরু হয়েছে তেল আভিভের। ফলে এই অস্থির পরিস্থিতিতে আসিয়ান-ভারত সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, নজরে রাখা হয়েছে চিনকেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.