সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকায় যে ইহুদি বিদ্বেষ আরও বাড়ছে তার প্রমাণ ওয়াশিংটন ডিসির এই ঘটনা। ইহুদি মিউজিয়ামের সামনে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন দুই ইজরায়েলি দূতাবাস কর্মী। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। ক্ষোভপ্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইহুদি বিদ্বেষের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
সিএনএন সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার রাতে। মার্কিন ইহুদি কমিটির সিইও জানান, এদিন মিউজিয়ামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সময়ই গুলি চলে। আহতও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। পুলিশের অনুমান, নিহত দু’জন ইজরায়েলি দূতাবাস কর্মীও অনুষ্ঠানেই ছিলেন। ঘটনার তদন্তে নেমেছে মার্কিন পুলিশ। বাসিন্দাদের ওই এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ইজরায়েলি দূতাবাসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গুলি চলার সময় ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত সেখানে ছিলেন না।
আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ‘ট্রুথ সোশাল’-এ লেখেন, ‘ইহুদি-বিদ্বেষের জেরেই এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। এখনই এই বিদ্বেষের অবসান হওয়া উচিত। ঘৃণা এবং মৌলবাদের কোনও স্থান নেই আমেরিকায়। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে। এই ধরণের ঘটনা যে ঘটতে পারে তা ভেবেই দুঃখ লাগছে। ঈশ্বর আপনাদের সকলের মঙ্গল করুন!’ এই ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়েছে ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট ইসাক হারজগ বলেছেন, “ওয়াশিংটনের এই দৃশ্য দেখে বিধ্বস্ত। ইজরায়েলি দূতাবাসের দুই তরতাজা কর্মী প্রাণহানি ইহুদিদের প্রবল বিদ্বেষ, হিংসার প্রমাণ। আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আমেরিকা ও ইজরায়েলকে একযোগে এই হিংসার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
জানা গিয়েছে, গতকাল রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন আমেরিকার অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি। দুঃখপ্রকাশ করে তিনি সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আমরা মর্মাহত। অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে এইরকম অকথ্য হিংসার ঘটনা ঘটেছে। ঠিক কী ঘটেছিল সেই সম্পর্কে পুলিশের কাছ থেকে আরও তথ্যের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা রয়েছে। আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি।” রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ইজরায়েল রাষ্ট্রদূত ড্যানি ডানন ক্ষোভ উগরে বলেন, “ওয়াশিংটন ডিসিতে ইহুদি মিউজিয়ামের কাছে গুলি চলেছে। এটা ইহুদি বিরোধী সন্ত্রাসবাদ।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। যার বদলা নিতে গাজায় যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই থেকে লড়াই চলছে গাজায়। মহিলা, শিশু সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে ৫৩ হাজার মানুষের। এই প্রাণহানির নিন্দা করলেও প্রথম থেকেই ইজরায়েলের পাশে রয়েছে আমেরিকা। এর জন্যই প্যালেস্টাইনপন্থী আমেরিকানদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বেড়েছে ইহুদি বিদ্বেষ। গাজায় ইজরায়েলি সেনার ‘গণহত্যার’ প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল একাধিক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.