সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অন্তর্দ্বন্দ্বের ছায়া ক্রমশই ঘিরে ধরছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারকে। বহুবার তা প্রকাশ্যেও এসেছে। কিন্তু এবার যা ঘটল, তা কার্যত নজিরবিহীন রাজপরিবারের ইতিহাসে। নিজেদের রাজকীয় পরিচয় ছাড়লেন প্রিন্স হ্যারি এবং তাঁর স্ত্রী মেগান মর্কেল। আপাতত পরিবারের সর্বজ্যেষ্ঠ সদস্য, অভিভাবকসম রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ কিংবা বাবা প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে আলোচনা না করেই সংবাদমাধ্যমে এই ঘোষণা করে দিলেন ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ সাসেক্স। জানালেন, তাঁরা উত্তর আমেরিকা টুরে যাচ্ছেন।
চার্লস-ডায়নার দুই ছেলে প্রিন্স উইলিয়ম এবং প্রিন্স হ্যারির মধ্যে সদ্ভাব বিশেষ না থাকলেও, কোনও শত্রুতা সেভাবে চোখে পড়েনি। তবে রাজপরিবার ঘনিষ্ঠদের অনেকর মতেই, প্রিন্স হ্যারির বিয়ের পর মেগান মর্কেল তাঁদের পরিবারে পা রাখতেই নাকি সমস্ত কোন্দলের শুরু। দু’ভায়ের পরিবারে এমনই ঝাগড়ঝাঁটি হতে থাকে যে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত একটা সময় বন্ধ হয়ে যায়। সেই বিবাদ থামাতে আসরে নামেন স্বয়ং রানি। কিন্তু শেষপর্যন্ত ভাঙন ঠেকানো গেল না। প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মর্কেল বাড়ি থেকে বেরিয়েই গেলেন। এর জন্য পরোক্ষে পাপারাজিদের দায়ী করে গেলেন। বাকিংহাম প্যালেস থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন যে প্রচারের আলো থেকে সরে আসতে তাঁদের অনেক লড়তে হচ্ছে। অনেক নেতিবাচক খবরাখবর হচ্ছে তাঁদের ঘিরে, যা তাঁদের জীবনে প্রভাব ফেলছে। বিবৃতিতে আরও লেখা – ”আমরা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে চাই।এই রাজপরিবারের বাইরে বেরিয়ে সাধারণের সঙ্গে মেলামেশার যে পরিবেশ, তা উপভোগ করতে চাই। ভেবেছি, ইংল্যান্ড এবং উত্তর আমেরিকায় ঘুরিয়েফিরিয়ে সময় কাটাব। এও চাই যে রানি নিজের রাজত্ব সামলে শান্তিতে থাকুন।”
হ্যারি-মেগানের এই বিবৃতি বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই পৌঁছেছে বাকিংহাম প্যালেসের অন্যান্য সদস্যদের কাছে। মুখ রক্ষায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পালটা বিবৃতি দিয়ে রানি জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত আলোচনা হ্যারি-মেগানের সঙ্গে তাঁর হয়েছিল বহু আগে। আমরা জানতাম যে ওঁরা আলাদাভাবে কিছু করতে চায়। তবে তাতে আরও কিছুটা সময় নেবে বলে ভাবা হয়েছিল।” এই বিবৃতি থেকেই স্পষ্ট, কতটা হতাশ তাঁরা। কিছুটা আশাহতও।
প্রিন্স উইলিয়াম, স্ত্রী কেট এবং প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মর্কেল – এঁরা সকলেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রথম সারির সদস্য বলে পরিচিত। রাজ সিংহাসনের উত্তরসূরি। অন্দরের খবর, সম্প্রতি হ্যারি এবং উইলিয়মের সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না। এমনকী হ্যারি নিজে তা স্বীকার করে বলেছেন যে দাদার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে খারাপ সময় চলছে। ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ সাসেক্সের খরচখরচাও অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। সাসেক্সে তাঁদের জন্য বরাদ্দ সম্পত্তি থেকে সেই ভার বহন করা হচ্ছিল। এসব নিয়ে রাজপরিবারে অশান্তিও বাড়ছিল। তবে এত দ্রুত তাঁদের এই সিদ্ধান্তে বড়সড় ধাক্কা খেল বাকিংহাম প্যালেস। ব্রিটেনের দু,একটি সংবাদমাধ্যম তাঁদের এই রাজকীয়ত্ব ত্যাগের সিদ্ধান্তকে মজা করে বলছে, ‘মেক্সিট’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.