সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেই বোধহয় বলে রক্তের টান! এতদিন আত্মনির্ভরতার আকাঙ্ক্ষা, রাজ পরিবারের ‘শিকল’ থেকে স্বাধীন হিসেবে বেঁচে থাকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে বহু লড়াই হয়েছে, আর নয়। এবার ঘরে ফেরার পালা! পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন চাইছেন ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি। শুক্রবার বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে মনের কথা প্রকাশ করে ফেলেছেন তিনি। হ্যারির বাবা অর্থাৎ কিং চার্লস ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর আয়ু কমছে। আর এই অনুভূতিটাই হ্যারিকে অন্তর থেকে বদলে ফেলেছে। বাকি জীবনটা বাবার পাশে থাকতে চেয়ে রাজপরিবারে ফিরতে চান প্রিন্স হ্যারি।
প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী, রাজবধূ মেগান বাকিংহাম প্যালেসে ততটা সমাদৃত নন। সেলিব্রিটি মেগানের জীবনযাপনের সঙ্গে নাকি রাজ-ঐতিহ্য ঠিক খাপ খায় না। তাই নিজের পছন্দে বিয়ের পরই হ্যারি রাজপরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকী ‘রাজ’ তকমাও মুছে ফেলতে চান ডিউক অফ সাসেক্স। তাই লন্ডন ছেড়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় এসে বসবাস শুরু করেন। নিজের পরিবারে উত্তরাধিকার সূত্রে যে যে আর্থিক সুবিধা হ্যারি ও তাঁর পরিবারের পাওয়ার কথা, তার সবটাই হেলায় ছেড়ে আসেন। আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে একাধিক ব্যবসা শুরু করেন। সঙ্গ দেন মেগানও। ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই ছেলেমেয়ে – প্রিন্স আর্চি ও প্রিন্সেস লিলিবেটকে নিয়ে মোটের উপর দিন কাটছিল ভালোই। ইতিমধ্যে বাকিংহাম প্যালেসের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি তাঁদের। ঠাকুমার কুইন এলিজাবেথের শেষকৃত্যে ছেলেমেয়ে-সহ উপস্থিত হয়ে নিয়ম রক্ষাটুকু করেছিলেন হ্যারি-মেগান।
কিন্তু পরিবারের সঙ্গে এই লড়াই হয়েছে অনেক। আর দূরত্ব বাড়িয়ে নিয়ে যেতে চান না চার্লস-ডায়নার ছোট ছেলে। বিবিসি-র সাক্ষাৎকারে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “এই লড়াইটা চালিয়ে যাওয়ার আর কোনও অর্থ নেই। জীবন অতি মূল্যবান। জানি না, বাবাকে আর কতদিন কাছে পাব। তিনি তো আমার সঙ্গে কথাও বলেন না। যদি আমাদের আবার মিলন হয়, তাহলে খুবই ভালো হবে। আমি এমন কোনও পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি না যে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে ব্রিটেনে ফিরে যাব। আমার পরিবার হয়ত অনেক কারণেই আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না। কিন্তু আমি ভীষণ বিধ্বস্ত! এতটাই বিধ্বস্ত যে এখন মনে হয়, আমার এই অবস্থার জন্য যাঁরা দায়ী, এটা বোধহয় তাঁদের কাছে জয়ের শামিল। সেটাও আমি মেনে নিচ্ছি।” হ্যারির জীবনে এখন পরিবারের সঙ্গে মিলনাকাঙ্ক্ষাই মুখ্য হয়ে উঠেছে, সাক্ষাৎকারেও সেই আবেগ আর সামলাতে পারলেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.