সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে আমেরিকা বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিল, উৎসাহ দিয়েছিল যুদ্ধ চালিয়ে যেতে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন সেই আমেরিকাই এখন ইউক্রেনকে গিলে খাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে! সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বার্তায় এই জল্পনাই চরম আকার নিল। ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের যে জমি রাশিয়া দখল করেছে, তা আমেরিকার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার। পুতিনের এহেন বার্তায় ইউক্রেন বেশ বুঝতে পারছে তলে তলে বিরাট ‘খেলা’ হয়ে গিয়েছে। দুই শক্তিধরের ফাঁদে পড়ে জেলেনস্কির এখন ‘ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি’ দশা।
বাইডেন বিদায়ের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকায় মসনদে বসতেই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধ থামানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। যার শুরুতেই আমেরিকা জানিয়ে দিয়েছেন, এতদিন ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে যে পরিমাণ অস্ত্র ইউক্রেনকে দেওয়া হয়েছে তা সুদে আসলে ফেরত পেতে ইউক্রেনের অর্ধেক খনিজ সম্পদ আমেরিকাকে দিতে হবে। ওয়াশিংটনের এই প্রস্তাবে ইউক্রেন গররাজি হওয়ায় রীতিমতো ক্রুদ্ধ ট্রাম্প। ইউক্রেনের শাসক জেলেনস্কিকে ‘অপদার্থ’, ‘একনায়ক’ বলেও তোপ দাগতে ছাড়েননি তিনি। এদিকে যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও রাশিয়ার দখলে থাকা জমি ফেরত পেতে রাষ্ট্রসংঘে ইউক্রেনের পেশ করা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে গিয়ে রাশিয়াকে সমর্থন করেছে আমেরিকা।
কোণঠাসা ইউক্রেনকে আরও চাপে ফেলতে এবার আমেরিকাকে বিরাট প্রস্তাব দেওয়া হল রাশিয়ার তরফে। ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়ে দিলেন, ‘যুদ্ধে ইউক্রেনের যে অংশ আমরা দখল করেছি সেখানকার খনিজ সম্পদ আমরা আমেরিকা-সহ অন্যান্য বন্ধুর সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারি।’ শুধু তাই নয়, পুরনো বন্ধুত্ব নতুন করে শুরু করতে আমেরিকাকে অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানিরও বার্তা দেন পুতিন। জানান, “মস্কো আমেরিকার বাজারে প্রায় ২ মিলিয়ন টন অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহ করতে প্রস্তুত।” রাশিয়ার এই বার্তায় স্পষ্ট যে আমেরিকা ইউক্রেনের হাত ছেড়ে তাঁদের পক্ষ নিক। এক্ষেত্রে আমেরিকা ও রাশিয়া দুই দেশেরই লাভ। ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক গতিবিধি দেখে কূটনৈতিক মহলের দাবি, আমেরিকাও এই প্রস্তাবে খুব একটা অরাজি নয়। তা যদি হয় সেক্ষেত্রে বলাই যায় আমেরিকা ও রাশিয়া যৌথভাবে ইউক্রেনকে লুট করার পরিকল্পনা চালাচ্ছে।
ইউক্রেনের এই করুণ অবস্থার সঙ্গে ১৯৩৯ সালের পোল্যান্ডের মিল খুঁজে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। যেখানে পোল্যান্ডকে গিলে খেতে ষড়যন্ত্র করেছিল জার্মানি ও রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইয়নিয়ন)। পরস্পরকে শত্রু হিসেবে দেখলেও যেখানে দুই দেশ চুক্তি করে রাশিয়া ও জার্মানি কেউ কারও উপর আক্রমণ করবে না। এবং পোল্যান্ডে হামলা চালিয়ে তা দখল করে আধাআধি ভাগ করে নেবে তারা। সেই মতো হামলাও চলে। শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তবে রাশিয়া ও আমেরিকার এই ষড়যন্ত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মেনে নেবে না বলেই অনুমান করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বন্ধু দেশের মুখ বন্ধ করতে আমেরিকা কী করে সেটাই দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.