ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষের পথে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ! সূত্রের খবর. দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বুধবার ‘যুদ্ধ থামানো’র প্রস্তাব দিল ‘কোণঠাসা’ হামাস। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। ইজরায়েলি হানায় সেখানে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ১০৭ প্যালেস্তিনীয়র। হামাস জঙ্গিগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দাবি অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে ৫০০। মনে করা হচ্ছে, ইজরায়েলের এই লাগাতার গোলা বর্ষণে ‘কোণঠাসা’ হামাস এবার অস্ত্র সংবরণের পথে হাঁটছে।
ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ফলে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতা করছে মিশর, কাতারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ। ইতিমধ্যে চার মাসের যুদ্ধে স্রেফ গাজায় প্রাণ গিয়েছে, ২৭ হাজার ৫৮৫ জনের। জখম অন্তত প্রায় ৬৭ হাজার। অন্তত এমনটাই দাবি করছে গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সূত্রের খবর, যুদ্ধ থামাতে দিন কয়েক আগে মিশর ও কাতারের তরফে হামাসের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেছিল আমেরিকা ও ইজরায়েলও। এর মধ্যেই এবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠাল হামাস জঙ্গিঘোষ্ঠী। সেই প্রস্তাবপত্রে তিনদফা ‘সমাধান সূত্র’ রেখেছে তারা। কী কী শর্ত?
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, তিনদফা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি সংঘর্ষ বিরতির মেয়াদ হবে ৪৫ দিন। প্রথম দফার বিরতিতে হামাসের হাতে অপহৃত ১৯ বছরের নিচের পুরুষ-মহিলা, বয়স্ক এবং অসুস্থ ইজরায়েলি নাগরিককে ছাড়া হবে। পরিবর্তে ইজরায়েলের জেলে থাকা দেড় হাজার প্যালেস্তিনীয় মহিলা ও শিশুকে ছাড়তে হবে। দ্বিতীয় দফায় ছাড়া হবে বাকি পুরুষ অপহৃতদের। তৃতীয় দফায় দুপক্ষের মধ্যে দেহ ও দেহাবশেষ আদানপ্রদান। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ধ্বংশাবশেষে পরিণত হওয়া গাজা স্ট্রিপের পুনর্গঠন শুরু হবে। ধীরে ধীরে ওই ভূখণ্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসবে ইজরায়েলি সেনা। তৃতীয় দফা সংঘর্ষ বিরতির মধ্যে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করার চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এর মাঝেই গাজায় প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার, পানীয় আরও বেশি করে পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু হঠাৎ কেন এই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিল হামাস?
ইজরায়েল বার বার অভিযোগ করেছে, গাজায় ত্রাণ আসার অর্থ সন্ত্রাসে সহযোগিতা করা। বিষয়টি সামনে আসার পরই ইউরোপের বহু দেশ গাজা স্ট্রিপে ত্রাণ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ছোট্ট ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের অবস্থা শোচনীয়। বাড়ছে ক্ষোভ। ইজরায়েলের লাগাতার হানায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে হামাসের সুড়ঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধ্বংসস্তূপ হয়েছে উত্তর গাজা। দক্ষিণ গাজার পরিস্থিতিও তথৈবচ। এলাকাটির একটি সীমান্ত রয়েছে মিশরের সঙ্গে। অপরটি ইজরায়েলের সঙ্গে। লাগাতর ইজরায়েলি গোলাবর্ষণের মুখে হামাসের দুটো রাস্তাই খোলা ছিল, এক যুদ্ধবিরতি, দুই মিশর সীমান্ত ধরে পালিয়ে যাওয়া। এমন পরিস্থিতিতে প্রথম বিকল্পই বেছে নিল জঙ্গিগোষ্ঠীটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.