সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আশঙ্কায় কাঁপছে গোটা ইউরোপ। অশনি সংকেত দেখছে আমেরিকা থেকে ভারত। এহেন পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিদেশে ফৌজ পাঠানোর অনুমতি দিল রুশ পার্লামেন্ট। ফলে বিশ্লেষকদের ধারণা, এবার ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে মস্কো।
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দেশের বাইরে সেনা মোতায়েনের জন্য অনুমতি চেয়ে রুশ পার্লামেন্টে আবেদন জানান প্রেসিডেন্ট পুতিন। আর সংঘাতের আশঙ্কা আরও উসকে সেই আবেদনে সবুজ সংকেত দিয়েছে রুশ সংসদের উচ্চকক্ষ ‘ফেডারেশন কাউন্সিল’। পার্লামেন্টের ১৫৩ সদস্যের সবাই প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত। ফলত, ইউক্রেনের রুশপন্থী ‘স্বাধীন’ অঞ্চল ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে পূর্ণমাত্রায় সেনা পাঠানো শুরু হবে এবং যুদ্ধ স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
সংসদের উচ্চ কক্ষের অনুমতি পাওয়ার পর এক বিবৃতিতে রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিকোলে প্যানকভ বলেন, ‘‘ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা থমকে গিয়েছে। ইউক্রেন নেতৃত্ব হিংসা ও রক্তপাতের পথ নিয়েছেন। তাই আমাদের হাতে আর কোনও বিকল্প নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী সমর্থিত অঞ্চল সেনা ও যুদ্ধ সরঞ্জামে মুড়ে দিয়েছে ইউক্রেন। তাই অন্য রাজ্যের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং আগ্রাসন রুখতে রাশিয়া লড়াই করবে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করেছেন, ইউক্রেনে (Ukraine) পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন চালাচ্ছে রুশ হানাদার বাহিনী। একই দাবি করেছেন হোয়াইট হাউসের ডেপটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসর জন ফাইনার। এহেন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার কূটনৈতিক আলোচনার আশায় জল ঢেলে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করার কথা ঘোষণা করলেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। আগামী বৃহস্পতিবার ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য, ‘রাশিয়া যে পদক্ষেপ করেছে তার ফলে কূটনীতির সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।”
এদিকে, ইউক্রেন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কার্যত একঘরে রাশিয়া। রুশ ব্যাংক ও পুতিন ঘনিষ্টদের রুশ ধনকুবেরদের উপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। একই পথে হাঁটছে ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা। পুতিনের আগ্রাসনের নিন্দা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। মঙ্গলবার বাইডেন জানিয়েছেন, দেশ হিসেবে শুধু রাশিয়া নয়, সে দেশের বৃহৎ উদ্যোগপতিদের জন্যও বন্ধ পশ্চিমের বাজার। পাশাপাশি রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক ভিইবি এবং মিলিটারি ব্যাংকের উপরও জারি হবে এই নিষেধাজ্ঞা। পাশাপাশি, রাশিয়ার জন্য বাজার বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছে পশ্চিমের দেশগুলি।
তবে, চিন ও ভারত এখনও মস্কোর পাশেই রয়েছে। ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা থেকে শুরু করে চিনকে বাগে রাখার চেষ্টায় পশ্চিম ও ক্রেমলিনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি। তাই গতকাল রাষ্ট্রসংঘের বৈঠকে সীমান্ত সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরাসরি রাশিয়ার নিন্দা করেনি ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.