সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতির কৃতিত্ব নেওয়ার পর এবার রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia-Ukraine)। বিশ্বমঞ্চে নিজেকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে তুলে ধরতে কোনও খামতি রাখছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ২ ঘণ্টার কথোপকথনের পর ট্রাম্প দাবি করলেন দ্রুত যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনার বসতে রাজি হয়েছে মস্কো-কিয়েভ। মঙ্গলবার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ট্রুথ-এ সগর্বে এমনই ঘোষণা করেন হোয়াইট হাউসের বর্তমান অধীশ্বর।
গত ৩ বছর ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত রাশিয়া ও ইউক্রেন। বাইডেন আমলের ক্ষত সারাতে ক্ষমতায় এসেই দুই দেশের যুদ্ধবিরতি করাতে তৎপর হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ইস্যুতে মঙ্গলবার পুতিনকে ফোনে ধরেন তিনি। এরপরই সোশাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লেখেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ২ ঘণ্টার কথোপকথন শেষ হল। রাশিয়া ও ইউক্রেন দ্রুত যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করবে। যুদ্ধবিরতির শর্ত দুই রাষ্ট্র নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে।’ পাশাপাশি এই যুদ্ধ শেষের পর রাশিয়ার সঙ্গে বৃহত্তর বাণিজ্যের বার্তা দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমেরিকা চায় এই রক্তপাত শেষ হওয়ার পর বৃহত্তর বাণিজ্যের পরিসর তৈরি করতে। রাশিয়ার জন্য বিপুল কর্মসংস্থান এবং সম্পদ তৈরির একটি দুর্দান্ত সুযোগ রয়েছে। একইভাবে, ইউক্রেন দেশ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় বাণিজ্যের দিক থেকে সুবিধাভোগী হতে পারে।’ ট্রাম্প জানিয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন, ফ্রান্স, ইতালি, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ও জার্মানির চ্যান্সেলরের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দাবি করা হচ্ছে, পোপের উপস্থিতিতে ভ্যাটিকানে এই আলোচনা হতে পারে।
ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার কথা স্বীকার করে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় এই ইস্যুতে বার্তা দেন পুতিনও। তিনি লেখেন, ‘সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনায় বসতে সম্মতি জানিয়েছি। ভবিষ্যতে ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করতেও আমরা প্রস্তুত। তবে এই চুক্তির শর্ত ও সময় রাশিয়া জানিয়ে দেবে।’ পুতিন আরও বলেন, ‘এই সংঘর্ষবিরতির লক্ষ্যে রাশিয়ার অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। সমস্যার মূল কারণগুলি খুঁজে বের করে তার সমাধান ও শান্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে কথা দুই দেশের যুদ্ধবিরতিতে নিজের কৃতিত্বের কথা ফলাও করে জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, বাণিজ্য বন্ধের হুঁশিয়ারি দিতেই দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। ট্রাম্পের এই দাবির পর শুরু হয় ব্যাপক বিতর্ক। এবার রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাতে ট্রাম্পের তৎপরতায় কূটনৈতিক মহলের দাবি, আসলে আমেরিকাকে শান্তির লক্ষ্যে এক মহান দেশ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছেন না নয়া প্রেসিডেন্ট। তাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ব্যবসায়ী দেশ এখন নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে মরিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.