সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক বিশাল কৃষ্ণগহ্বর, যা গিলে ফেলে আশেপাশের সব নক্ষত্রদের। ব্ল্যাক হোলের এই তত্ত্বের কথা অজানা নয়। তবে এই প্রথমবার বিজ্ঞানীরা দেখলেন, ব্ল্যাক হোল যখন নক্ষত্র গিলে ফেলে তখন আসলে কী ঘটে৷ মহাকাশবিজ্ঞানে এই পর্যবেক্ষণ একটি ল্যান্ডমার্ক হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে৷
প্রচণ্ড আকর্ষণী শক্তির জেরে ব্ল্যাক হোলের ভিতর ঢুকে পড়ে তার আশেপাশে থাকা নক্ষত্ররা৷ কিন্তু তারপর? ব্ল্যাক হোল কি বিলকুল হজম করে ফেলে সে নক্ষত্রদের নাকি ঘটে অন্য কিছু! নতুন এই পর্যবেক্ষণে সেই দিকটিই প্রকাশিত হয়েছে৷ চলতি সপ্তাহে এ নিয়ে দু’টি গবেষণা সামনে এসেছে। একটি নাসার বিজ্ঞানীরা প্রকাশ করেছেন এবং অপরটি চিনের সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষকদের। তাঁদের দাবি, নাসার একটি বিশেষ টেলিস্কোপের মাধ্যমে ওই কালো গহ্বরের কাণ্ডকারখানা চোখে পড়েছে। ইনফ্রারেড রশ্মির বিশ্লেষণের মাধ্যমেই এই কাণ্ডকারখানার ধারণা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ দেখা যাচ্ছে, ব্ল্যাক হোলের খপ্পরে পড়ার একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব আছে৷ সেই সীমানা পেরলে আর কোনও কিছুই ফিরে আসতে পারে না, এমনকী আলোও ফিরতে পারে না৷ ব্ল্যাক হোলের আকর্ষণী শক্তি সবকিছুকেই নিজের দিকে টেনে নেয়৷ ফলে গহ্বরটির বৃহদাকার পেটের মধ্যে প্রবেশ করে একের পর এক নক্ষত্র। আসলে কী হচ্ছে? তীব্র আকর্ষণের সামনে পড়ে সবকিছুই মাত্রাতিরিক্ত প্রলম্বিত হয়ে পড়ছে ও বহু টুকরো হয়ে পড়ছে৷ ফলে আলাদা করে কোনও কিছুর আর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না৷এই ঘটনাকেই মনে করা হয়, যা কিছু সামনে পাচ্ছে গিলে ফেলছে ব্ল্যাক হোল৷
নক্ষত্রদের গিলে ফেলার পর বিরাট ‘ঢেকুর’ তুলছে সেই গহ্বর। আর তাতেই মহাকাশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আলোক বিচ্ছুরণ ঘটছে। ব্ল্যাক হোলের এই গিলে ফেলার ঘটনাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলা হচ্ছে ‘টাইডাল ডিসরাপশন ফ্লেয়ার।’ আসলে নক্ষত্র গিলে ফেলার ঘটনার পর ওই কালো গহ্বর বিপুল পরিমাণ শক্তি নিঃসরণ করে। যার মধ্যে রয়েছে অতি বেগুনি রশ্মি ও এক্স-রে রশ্মি। এই রশ্মিই আশেপাশে থাকা ছোট-বড় সমস্ত কিছু নিঃশেষ করে দিচ্ছে। এই নিঃসরণের মাধ্যমে ফের গহ্বর খালি হয়ে যাচ্ছে। আর গহ্বর আবার খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তবে শুধু আলোক বিচ্ছুরণই নয়, এর সঙ্গে জন্ম নিচ্ছে ধুলি ঝড়। এই ধুলিকণাই আলোকেও ফিরে আসতে দেয় না।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই পর্যবেক্ষণ ব্ল্যাক হোলের খুঁটিনাটি জানতে তো সাহায্য করছেই, সেই সঙ্গে অতিরিক্ত আলোক রশ্মি ও ধুলি ঝড় নিয়েও গবেষণার ক্ষেত্রেও নতুন দিশা দেখাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.