সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত সোভিয়েত ইউনিয়নের (Soviet Union) শেষ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচভ (Mikhail Gorbachev)। সোভিয়েত নেতার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। মঙ্গলবার গভীর রাতে রাশিয়ার (Russia) সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মস্কোয় (Moscow) বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছে গর্বাচভের। বেশকিছুদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি, এদিন সেন্ট্রাল ক্লিনিক্যাল হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
১৯৩১ সালে জন্ম মিখাইল গর্বাচভের। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯১ অবধি ক্ষমতায় ছিলেন মিখাইল গর্বাচভ। তাঁর আমলে সোভেয়েত-মার্কিন (Soviet Union-USA) শীতল সম্পর্কের উন্নতি হয়। তার আগে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ১৯৮৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি হন গর্বাচভ। গর্বচভের ঐতিহাসিক নয়া নীতি ছিল ‘গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রইকা’। ‘গ্লাসনস্ত’ শব্দটির অর্থ মুক্ত চিন্তা বা স্বচ্ছতা এবং ‘পেরেস্ত্রইকা’ শব্দটির অর্থ হল পুনর্গঠন। গর্বাচভ কমিউনিস্ট শাসনকে স্বৈরতন্ত্রের পরিবর্তে গণতান্ত্রিক ও মানবিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। যদিও এক জীবনে নায়ক ও খলনায়ক দুই স্বীকৃতিই পেয়েছেন এই সাবেক সোভিয়েত নেতা। তাঁর আমলেই মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে কমিউনিজমের পতন ঘটেছিল। একদিকে যেমন অসংখ্য সোভিয়েত নাগরিকের কাছে স্বাধীনতা প্রদানকারী ‘মসিহা’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ও পরবর্তী বিশৃঙ্খলার জন্য তাঁকেই দায়ী করা হয়।
গর্বাচভের অন্যতম ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হল বার্লিন প্রাচীরের পতন রোধে নাক না গলানো। তিনি মনে করেছিলেন, বার্লিন প্রাচীর সংক্রান্ত ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ হতে পারে। এই বিষয়ে কতকটা নৈব্যক্তিক অবস্থান নেন গর্বাচভ। যদিও সেই সময় পূর্ব জার্মানি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতেই পারতেন তিনি। ফলে ওই পাঁচিলের পতনের দু’বছর আগে ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে রোনাল্ড রেগন অনুরোধ করেছিলে্ন, ‘‘মিস্টার গর্বাচভ, এই গেট খুলে দিন। ভেঙে ফেলুন পাঁচিল।’’
১৯৯০ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার (Nobel Peace Price) পান মিখাইল গর্বাচভ। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin), রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) তরফে শোকবার্তায় মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরে (Antonio Guterres) বলেন, ‘‘এক জন শক্তিশালী নেতা। যিনি শান্তির জন্য অক্লান্ত ভাবে কাজ করে গিয়েছেন।’’ উল্লেখ্য, গর্বচভের আমল থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পূর্ণ অন্য দিকে বাঁক নিয়েছে। যার উদাহরণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। এই বিষয়ে গর্বাচভের মতামত জানা যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.