সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার মধ্যস্থতাতেই নাকি ভারত- পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি হয়েছে। কম করে ৭ বার এমনই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এনিয়ে এবার তাঁকে কটাক্ষ করলেন প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। তাঁর কথায়, “ট্রাম্প তো ট্রাম্পই। তিনি সব কিছুরই কৃতিত্ব নিতে চান।”
পহেলগাঁও হামলার বদলা নিতে ৬ মে মাঝরাতে জঙ্গিদের ‘আঁতুড়ঘর’ পাকিস্তানে আঘাত হানে ভারতীয় সেনার অপারেশন। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কেও পালটা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। তাদের ড্রোন হামলা প্রতিহত করে ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ভারতের মারে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আক্রমণ থামানোর আর্জি জানিয়েছিল পাকিস্তান। তারপর সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ইসলামাবাদের মিনতিতে সাড়া দেয় দিল্লি। ১০ মে সম্মতি জানানো হয় সংঘর্ষবিরতির।
ওইদিনই ট্রাম্প নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে জানিয়েছিলেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে দীর্ঘ কথা বলার পর ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে যেতে রাজি হয়েছে। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশকে চাপ দিয়ে সংঘর্ষবিরতি করেছি। যুদ্ধ না থামালে বাণিজ্যেও না, হঁশিয়ারি দিয়েছিলাম। তাতেই কাজ হয়েছে।’ ফের একই রেকর্ড বাজিয়ে কয়েকদিন পর তিনি বলেন, “আমার সরকারই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি করিয়েছে। যা হয়েছে তার জন্য আমরা খুব খুশি। ভারত আর পাকিস্তান একে ওপরের প্রতিবেশী। দু’জনের মধ্যে এত রাগারাগি ঠিক নয়। আপনি যদি দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ দেখেন আপনারও তাই মনে হবে। এটা আমেরিকার বড় জয়।” ট্রাম্পের এহেন দাবি নাকচ গত সপ্তাহে সংসদীয় কমিটিতে বিদেশসচিব বিক্রম মিসরি সাফ জানিয়ে দেন, “ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি হয়েছে কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যে। এখানে কোনও তৃতীয়পক্ষ হস্তক্ষেপ করেনি। সংঘর্ষবিরতিতে আমেরিকারও কোনও দিক দিয়ে কোনও ভূমিকা ছিল না।”
এই প্রসঙ্গেই গতকাল বুধবার জন বোল্টন বলেন , “পাকিস্তানের অভ্যন্তরে যে স্থান থেকে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং যেখান থেকে এই হামলা চালানো হয়েছিল, সেখানে আত্মরক্ষার জন্য ভারতের পদক্ষেপ করার সম্পূর্ণ অধিকার ছিল। কোনও দেশ যদি তার ভূখণ্ডে এই ধরণের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে বা প্রকৃতপক্ষে সন্ত্রাসবাদে মদত দেয় তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পদক্ষেপ সম্পূর্ণ ন্যায্য ছিল। পাকিস্তান সরকারকে বোঝানোর দরকার ছিল যে, যদি তারা এটি নিয়ন্ত্রণে না আনে তবে তাদের পরিণতি আরও খারাপ হবে।” ট্রাম্পের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত কিছু নেই। ট্রাম্প তো সব কিছুরই কৃতিত্ব নিতে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এটা অনেকের কাছেই বিরক্তির কারণ হতে পারে।”
উল্লেখ্য, অতীতে একাধিকবার কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। পহেলগাঁও হামলার ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, “ভারত আর পাকিস্তান দু’জনেই আমার খুব কাছের। আমার বন্ধু। কাশ্মীরে তাদের লড়াই ১০০০ বছর ধরে চলে আসছে। এই লড়াই আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে। এছাড়া ওই সীমান্তে ১৫০০ বছর ধরে উত্তেজনা তৈরি হয়ে আছে।” যা নিয়ে নানা বিতর্কও হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.