সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত বছর করোনা মহামারীর শুরুর সময় লড়াইয়ে আমেরিকার (America) পাশে থেকেছিল ভারত (India)। সেই ভারতই এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রীতিমতো বেসামাল। তবে এই বিপদের সময় পাশে থাকার পরিবর্তে উলটে হোয়াইট হাউসের নয়া সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়তে হয়েছে নয়াদিল্লিকে। আমেরিকানদের ভ্যাকসিন না দেওয়া পর্যন্ত করোনা টিকার গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভারতে রপ্তানি করা হবে না। এমনটাই জানানো হয়েছে জো বাইডেনের প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আর এই বিষয়টি নিয়েই দেখা দিয়েছে চরম বিতর্ক। যার আঁচ পড়তে পারে দু’দেশের সম্পর্কেও।
সম্প্রতি করোনা টিকা তৈরির গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল রপ্তানি করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা। যদিও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই রপ্তানি এখনই সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানান, “মার্কিন প্রশাসনের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত মার্কিনীদের টিকা দেওয়া। তারপরই করোনার গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভারতে রপ্তানি করা হবে।” এর পিছনে অদ্ভূত যুক্তিও দেন প্রাইস। তাঁর কথায়, গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত আমেরিকায়। তাই এদেশের জনগণকে টিকা দিলে প্রত্যেক দেশের মানুষের উপকার হবে। কারণ, আমেরিকায় মৃত্যু ও সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। তাই আমেরিকার মানুষকে করোনা মুক্ত করলে গোটা বিশ্বে তা ছড়িয়ে পড়বে না। আমেরিকার জন্য অন্য দেশের সমস্যা হবে না। ইতিমধ্যে এই প্রসঙ্গে আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। তবে বাইডেন প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে, ভারতে যাতে টিকা উৎপাদনে সমস্যা না হয় সেদিকটাও খেয়াল রাখবে তারা। তা সত্ত্বেও অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকী এতে যে দুই দেশের সম্পর্কে আরও জটিলতা তৈরি হবে এমনই আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, এই বিতর্কের মাঝেই আবার ভারতের পাশে দাঁড়াতে বাইডেন প্রশাসনকে আরজি জানিয়েছে আমেরিকার অন্যতম বড় সংগঠন ইউএস চেম্বার অফ কমার্স। তাঁদের দাবি, অ্যাস্ট্রাজেনেকার কয়েক কোটি ডোজ সংরক্ষিত রয়েছে মার্কিন মুলুকে। কারণ সেদেশে এখনও এই টিকা ছাড়পত্র পায়নি। অথচ দেশের অনেক নাগরিকই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ বা দু’টি ডোজই পেয়েছেন। আর তাই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আপাতত ব্যবহার করা হচ্ছে না। অবিলম্বে ভারত-সহ করোনায় বিধ্বস্ত দেশগুলিকে সেই ডোজ দিয়ে দেওয়া হোক। এমনটাই দাবি জানিয়েছে তাঁরা। যদিও এই নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বাইডেন প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.